All MCQ

বাংলায় হোসেন শাহী বংশ - সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

কে কিভাবে বাংলায় হোসেন শাহী বংশের সূচনা করে?

আলাউদ্দিন হোসেন শাহ ১৪৯৩ খ্রিস্টাব্দে বাংলায় হোসেন শাহী বংশের সূচনা করেন। বকসি নিজামউদ্দিন রচিত তবাকৎ-ই-আকবরী অনুসারে বাংলার অত্যাচারী হাবসি শাসক মুজাফফরকে হত্যা করে তাঁর মন্ত্রী সৈয়দ হোসেন শাহ নাম নিয়ে সিংহাসনে বসেন।

রূপ গোস্বামী ও সনাতন গোস্বামী কে ছিলেন? 

হোসেন শাহ হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে যোগ্য ব্যক্তিদের উচ্চ প্রশাসনিক পদে নিয়োগ করেছিলেন। তাঁর মধ্যে রূপ গোস্বামী সনাতন গোস্বামী ছিলেন অন্যতম। এই দুই ভাই ছিলেন তাঁর শাসনব্যবস্থার মূল স্তম্ভস্বরূপ।

রূপ গোস্বামী রচিত কয়েকটি গ্রন্থের নাম?

রূপ গোস্বামী রচিত দুটি সংস্কৃত গ্রন্থ হল 'ললিত মাধব' ও 'বিদগ্ধ মাধব'।

কে কাকে ‘সাকর মল্লিক' ও দবীর-ই-খাস উপাধি নেন?

হোসেন শাহ তাঁর রাজস্ব সচিব রূপ গোস্বামীকে ‘সাকর-মল্লিক' এবং তাঁর কর্মাধ্যক্ষ সনাতন গোস্বামীকে দবীর-ই-খাস' উপাধি দিয়েছিলেন।

হোসেন শাহের আমলের নিযুক্ত কয়েকজন হিন্দু কর্মচারীর নাম উল্লেখ কর? 

হোসেন শাহের হিন্দু কর্মচারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন উজির গোপীনাথ বসু, কর্মাধ্যক্ষ সনাতন গোস্বামী, রাজস্ব সচিব রূপ গোস্বামী, ব্যক্তিগত চিকিৎসক মুকুন্দ দাস, সেনাপতি গৌড় মল্লিক প্রমুখ।

কে কেন সত্যপীরের পুজা প্রচলন করেন?

হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে বৈষম্য দূর করার উদ্দেশ্যে সত্যপীরের পুজার প্রবর্তন হোসেন শাহের এক উল্লেখযোগ্য কীর্তি। সংস্কৃত শব্দ ‘সত্য' ও আরবি থেকে ‘পীর’ এই দুটি শব্দকে দিয়ে তিনি বাংলার হিন্দু মুসলিম সবার জন্য সত্যপীর এর পুজার প্রচলন করেন। সত্যপীর হল সত্যনারায়ণ এর বিকল্প সংস্করণ।

কে মহাভারতের বাংলা অনুবাদ করেন?

হোসেন শাহের সেনাপতি পরাগল খাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় কবীন্দ্র পরমেশ্বর সমগ্র – মহাভারতের বাংলা অনুবাদ করেন।

কাকে কেন ‘নৃপতি তিলক' ও 'জগৎ ভূষণ' বলা হয়?

নবদ্বীপের কাজী চৈতন্যদেবের নাম সংকীর্তনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলে হোসেন শাহ সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন। তাঁর এই উদারতায় মুগ্ধ হয়ে হিন্দু পণ্ডিতরা তাঁকে ‘নৃপতি তিলক' ও জগৎ ভূষণ উপাধিতে ভূষিত করেন।

হুসেন শাহী আমলের সাহিত্য চর্চা বা কয়েকজন কবির নাম লেখ ?

হুসেন শাহী আমলে বাংলা সাহিত্যের নবজাগরণ ঘটে। মালাধর বসু, যশোরাজ খাঁ, কবীন্দ্র পরমেশ্বর, শ্রীকর নন্দী, বিজয় গুপ্ত, প্রমুখ কবি ও সাহিত্যিকের হুসেন শাহ পৃষ্ঠপোষকতা করেন। এছাড়া রূপ গোস্বামী, বিপ্রদাস পিপিলাই প্রমুখ গুণী লেখক তার সমসাময়িক ছিলেন। এছাড়া নসরৎ শাহের আমলে জ্ঞানদাস ও গোবিন্দদাসের মতো কবি সাহিত্যিকের আবির্ভাব ঘটে।

হুসেন শাহী আমলে আগত দুজন বিদেশী পর্যটকের নাম লেখ?

হুসেন শাহী আমলে আগত বিদেশী পর্যটকের নাম হল ইতালি পর্যটক বার্থেমাও, পর্তুগীজ পর্যটক বারবোসা।

‘শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত' গ্রন্থের লেখক কে? 

শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত গ্রন্থের লেখক হলেন কৃষ্ণদাস কবিরাজ গোস্বামী।

মনসামঙ্গল এর রচয়িতা কে? 

মনসামঙ্গল এর রচয়িতা হলেন বিজয়গুপ্ত।

হোসেন শাহী আমলের স্থাপত্য কীর্তি উল্লেখ কর?

হোসেন শাহের আমলে নির্মিত গৌড়ের গুণমন্ত মসজিদ, দরমাবারি মসজিদ, ফিরোজপুরে ছোটো সোনা মসজিদ। নসরৎ শাহের আমলে নির্মিত কদম রসুল, বড়সোনা মসজিদ, হোসেন শাহের সমাধি প্রভৃতি ছিল এই আমলের উল্লেখযোগ্য স্থাপত্যকীর্তি।

মহাভারতের 'অশ্বমেধ পর্বের' বাংলা অনুবাদ করেন?

পরাগল খাঁ পুত্র ছুটি খাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় শ্রীকর নন্দী মহাভারতের অশ্বমেধ’ পর্বের বাংলা অনুবাদ করেন।

হোসেন শাহী আমলে অর্থনৈতিক উৎকর্ষতার পরিচয় দাও? 

হোসেন শাহী আমলে অর্থনৈতিক উৎকর্ষতা লক্ষ্য করা যায়। বিদেশী বিবরণ, ও মঙ্গল কাব্যগুলিতে বহিঃবাণিজ্যের পরিচয় পাওয়া যায়। এমনকি সমুদ্রপথে শ্রীলঙ্কা, ইন্দোচীন, ইন্দোনেশিয়ায় বাণিজ্য চলতো। এযুগের উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য কেন্দ্রগুলি হল—গৌড়, সোনারগাঁও, চট্টগ্রাম, সপ্তগ্রাম প্রভৃতি। এইসব বন্দরগুলির মাধ্যমে বস্ত্র, রেশম, চিনি আমদানি করা হতো।

হোসেন শাহী আমলের ক্ষেত্রে কোন কোন্ রাগরাগিনীর পরিচয় দাও? 

হোসেন শাহী আমলে ‘কোদার', 'ধানশ্রী', 'মল্লার', ‘ভৈরবী', প্রভৃতি রাগরাগিনীর উল্লেখ আছে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url