নির্বাচিত প্রশ্ন উত্তর

★★★★★
Whatever is old, whatever is past is history. Itihas Pathshala is a short, answer-oriented, essay-based important Indian history questions help blog.

কিছু হারিয়ে যাওয়া প্রশ্নের উত্তরের জন্য নীচে Scroll করুন।

তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার বলতে কি বোঝ?

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় মেদিনীপুর জেলায় তমলুকে তাম্রলিপ্ত সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। সুতাহাটা, নন্দীগ্রাম, মহিষাদল, ও তমলুক এই চারটি থানা এই জাতীয় সরকারের নিয়ন্ত্রাধীন ছিল। এই সরকারের কার্যকাল ছিল ১৯৪২-এর ডিসেম্বর— ১৯৪৪ এর আগস্ট পর্যন্ত। এর সর্বাধিনায়ক ছিলেন সতীশচন্দ্র সামন্ত। তাঁর দুজন অনুগামী ছিলেন—অজয় মুখোপাধ্যায় ও সুশীল ধাড়া।

কংগ্রেসের কোন অধিবেশনে কবে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রস্তাব গৃহীত হয়?

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে এপ্রিল গান্ধিজি 'হরিজন পত্রিকায়' ভারত ছাড়ো আন্দোলনের কথা ব্যক্ত করলে ঐ বছরের ৪ই জুলাই এ ওয়ার্ধায় কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রস্তাব গৃহীত হয়।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের কয়েকজন নেতার নাম লেখো।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের কয়েকজন নেতার নাম হল- 

  • মহাত্মা গান্ধি
  • জহরলাল নেহরু
  • বল্লভ ভাই প্যাটেল
  • মৌলানা আবুল কালাম আজাদ
  • জয়প্রকাশ নারায়ণ
  • অরুণা আসফ আলি
  • সুচেতা কৃপালনী প্রমুখ।

অভিনব ভারত কে কবে প্রতিষ্ঠা করেন?

সভা, সমিতি, পুস্তিকা প্রচার ও শরীরচর্চার মাধ্যমে ভারতবাসীর মধ্যে স্বাধীনতার বাণী প্রচার করার উদ্দেশ্যে মহারাষ্ট্রের বিপ্লবী নেতা বিনায়ক দামোদর সাভারকর ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে 'মিত্র মেলা' নামে একটি সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে এর নতুন নামকরণ হয় 'অভিনব ভারত'।

স্বদেশী আন্দোলনের গুরুত্ব কী?

স্বদেশী আন্দোলনের গুরুত্ব হল—

  • 📍১। এই আন্দোলন হল ভারতবাসীর প্রথম ঐক্যবদ্ধ ও সর্বভারতীয় আন্দোলন। 
  • 📍২। এই আন্দোলন থেকে ভারতবাসী উপলব্ধি করে যে, ভিক্ষাবৃত্তি নয়, আত্মনির্ভরতাই হল দাবী আদায়ের একমাত্র পথ । 
  • 📍৩। এই আন্দোলনের ফলে স্বদেশী শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশ হতে থাকে।
  • 📍৪। এই আন্দোলনের সময় থেকেই বিপ্লবী আন্দোলন তীব্রতর রূপ ধারণ করে। 

স্বদেশী আন্দোলনের ব্যর্থতার কারণ লেখো।

স্বদেশী আন্দোলনের ব্যর্থতার কারণ হল-

  • 📍১। এই আন্দোলন মূলত উচ্চশিক্ষিত হিন্দুদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, সাধারণ মানুষ ও মুসলমানদের সঙ্গে এর কোনো যোগ ছিল না।
  • 📍২। আন্দোলন পরিচালনার জন্য কোনো কেন্দ্রীয় সংগঠন ছিল না।
  • 📍৩। সরকারি দমননীতি আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দেয়।
  • 📍৪। জমিদার ও ভূস্বামী সম্প্রদায় এই আন্দোলন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।

লাল-বাল-পাল কাদের বলা হয়?

পাঞ্জাবের লালা লাজপত রায়, মহারাষ্ট্রের বাল গঙ্গাধর তিলক, এবং বাংলার বিপিন চন্দ্র পালকে স্বদেশীযুগে প্রভূত জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এই তিন নেতা একত্রেউক্ত নামে পরিচিত হয়।

চরমপন্থীদের দ্বারা প্রকাশিত কয়েকটি পত্রিকার নাম কর।

চরমপন্থীদের দ্বারা প্রকাশিত কয়েকটি পত্রিকার নাম হল – কেশরী, মারাঠা, বন্দেমাতরম, 

সন্ধ্যা — ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়

নরমপন্থী ও চরমপন্থীদের মধ্যে নীতিগত পার্থক্য কি ছিল?

  • 📍১। নরমপন্থীদের সকল অনুপ্রেরণার উৎস ছিল ইংল্যান্ড, অন্যদিকে চরমপন্থীদের উৎস ছিল ভারতীয় ঐতিহ্য।
  • 📍২। নরমপন্থীদের লক্ষ্য ছিল ঔপনিবেষিক স্বায়ত্বশাসন অন্যদিকে চরমপন্থীদের লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণ মুক্ত পূর্ণ স্বরাজ বা স্বাধীনতা। 
  • 📍৩। নরমপন্থীরা আবেদন নিবেদন নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন অন্যদিকে চরমপন্থীরা প্রত্যক্ষ সংগ্রামে বিশ্বাসী ছিলেন।
  • 📍৪। নরমপন্থীরা নিয়মতান্ত্রিক পথে আন্দোলন পরিচালিত করত, কিন্তু চরমপন্থীরা স্বদেশী ও বয়কটের মাধ্যমে আন্দোলনকে গতিশীল করেছিল।

ইলবার্ট বিল কী?

ফৌজদারী বিধি অনুযায়ী কোনো ভারতীয় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা দায়রা জজ কোনো শ্বেতাঙ্গ আসামীর বিচার করতে পারতো না। এই বৈষম্য দূর করার জন্য বড়োলাট রিপণের আইন সচিব স্যার ইলবার্ট ভারতীয় বিচারকদের ইংরেজ বিচারকদের নায় সমান ক্ষমতা দিয়ে ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে একটি আইন পাশ করেন, যা ইলবার্ট বিল নামে পরিচিত।

ইলবার্ট বিতর্ক কী?

লর্ড রিপনের আইন সচিব ইলবার্ট ইউরোপীয় বিচারকদের ন্যায় ভারতীয় বিচারকদের সমান অধিকার প্রদান করলে এই বিলের বিরুদ্ধে কোলকাতা হাইকোর্টের ব্যারিস্টার ব্রনসন এর নেতৃত্বে ইংরেজরা একটি প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে তোলেন। অন্যদিকে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতসভার নেতৃত্বে এই বিলের স্বপক্ষে আন্দোলন গড়ে তোলেন। এটি ইলবার্ট বিল বিতর্ক বলে পরিচিত।

অস্ত্র আইন কি ?

ভারতবর্ষকে নিরস্ত্র করার উদ্দেশ্যে লর্ড লিটন ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে অস্ত্র আইন পাশ করেন। এই আইনে বলা হয় সরকারের অনুমতি ব্যতীত ভারতীয়দের অস্ত্র রাখা দণ্ডনীয় অপরাধ।

ফ্যাক্টারী আইন কী ?

১৮৮১ খ্রিস্টাব্দে লর্ড রিপণ প্রথম ফ্যাক্টারী আইন পাশ করে সাত বছরের নীচে শিশুদের কারখানার শ্রমিকের কাজে নিয়োগ নিষিদ্ধ করেন এবং বারো বছরের কম ব্যাসের শিশুদের কাজের প্রাত্যহিক সময় কমিয়ে দেয়।

দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র আইন কে কবে কি উদ্দেশ্যে প্রকাশিত করেন?

লর্ড লিটন ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে দেশীয় ভাষায় সংবাদপত্র আইন পাশ করেন। দেশীয় ভাষায় প্রকাশিত সংবাদপত্রগুলি সরকারি নীতির সমালোচনা করছে। ভারতবর্ষের মধ্যে রাজনৈতিক চেতনা বৃদ্ধি পায়। এই আশঙ্কায় লর্ড লিটন এই আইন পাশ করেন। এই আইনে বলা হয় যে—

  • ১। সংবাদপত্রগুলি এমন কিছু প্রকাশ করতে পারবে না, যা সরকার বিরোধী।
  • ২। সংবাদপত্রগুলোতে রাজদ্রোহমূলক কোনো রচনা প্রকাশিত হলে তার সম্পাদক ও প্রকাশককে শাস্তি দিতে হবে।
  • ৩। প্রয়োজনে ছাপাখানার লাইসেন্স ও সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করা হবে।

ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট কে কবে প্রত্যাহার করেন?

ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট এর বিরুদ্ধে দেশব্যাপি প্রতিবাদ দেখা দিলে যত ছাট লর্ড রিপণ ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দে এই আইনটি প্রত্যাহার করে নেন।

নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন কী?

নাটকের মাধ্যমে য জাতীয়তাবাদী ভাবধারা প্রকাশিত না হয়, সেজন্য লর্ড নর্থব্রুক ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে ১৪ই মার্চ নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন পাশ করেন। এই আইনে বলা হয় যে—

  • ১। পুলিশের অনুমতি ছাড়া কোনো নাটক অনুষ্ঠিত করা যাবে না।
  • ২। অভিনয়ের পূর্বে নাটক পুলিশের কাছে জমা দিতে হবে, সেই নাটক প্রকাশযোগ্য কিনা তা পুলিশ বিচার করবে।

উডের ডেসপ্যাচ' বা 'নির্দেশনামা' বলতে কি বোঝ?

ইংল্যান্ডের 'বোর্ড অফ কন্ট্রোল' এর সভাপতি স্যার চার্লস উড ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে ১৯শে জুলাই ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সুসংহত ও নিয়মবদ্ধ করার জন্য যে নির্দেশনামা পেশ করেন তা উডের ডেসপ্যাচ নামে পরিচিত। এই নির্দেশনামার ওপর ভিত্তি করে আধুনিক ভারতের শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। তাই এটিকে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের 'ম্যাগনাকাটা' বলা হয়।

উডের ডেসপ্যাচের সুপারিশগুলি হল—

  • ১। সরকারি উদ্যোগে প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠা। 
  • ২। কোলকাতা, বোম্বাই ও মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সিগুলিতে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন।
  • ৩। শিক্ষার প্রসারে স্বতন্ত্র শিক্ষা বিভাগ স্থাপন।
  • ৪। নারীশিক্ষার প্রসার।
  • ৫। সাধারণ শিক্ষার মাধ্যম হিসাবে মাতৃভাষার ব্যবহার।
  • ৬। শিক্ষক শিক্ষণ ব্যবস্থার প্রচলন।
  • ৭। মেধাভিত্তিক বৃত্তিদানের ব্যবস্থা করা প্রভৃতি।

কবে কারা হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন?

সুপ্রীমকোর্টের বিচারপতি স্যার হাইড ইস্ট, ডেভিড হেয়ার, রাজা রামমোহন রায়, রাজা রাধাকান্ত দেব প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উদ্যোগে ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে কোলকাতায় “হিন্দু কলেজ' প্রতিষ্ঠা হয়। এই কলেজের ছাত্রদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত, ভূদেব মুখোপাধ্যায়, কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়, রামগোপাল ঘোষ প্রমুখ।

মেকলে মিনিটস কি? 

১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক-এর আইনসচিব টমাস ব্যবিংটন মেকলে ভারতে প্রাচ্যশিক্ষার পরিবর্তে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের দাবীতে যে প্রতিবেদন সরকারের কাছে পেশ করেন তা 'মেকলে মিনিটস' নামে পরিচিত। তিনি অভিমত দেন যে, উচ্চ ও মধ্যবিত্তের মধ্যে ইংরাজি শিক্ষা বিস্তৃত হলে তা 'ফিলট্রেশন তত্ত্ব' অনুযায়ী ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে এবং ভারতে নবজাগরণ আসবে।

ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারে ডেভিড হেয়ারের অবদান কি ছিল? 

বাংলার পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারের ইতিহাস স্কটল্যান্ডের ঘড়ি ব্যবসায়ী ডেভিড হেয়ারের নাম চিরস্মরণীয়। তিনি কোলকাতায় হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কোলকাতায় ইংরেজি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও ছাত্রদের জন্য ভালো পাঠ্যপুস্তক রচনা ও সুলভে বিতরণের জন্য তাঁর উদ্যোগে ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে ‘স্কুল বুক সোসাইটি’ প্রতিষ্ঠিত হয়।

শ্রীরামপুর ত্রয়ী বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে?

জন মার্শাল, উইলিয়াম কেরি ও উইলিয়াম ওয়ার্ড—শ্রীরামপুর ব্যাপটিস্ট মিশনের এই তিনজন ধর্মপ্রচারক ‘শ্রীরামপুর ত্রয়ী” নামে পরিচিত। ভারতে খ্রিস্টধর্ম ও পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তার এবং ভারতীয় জাতীয় জাগরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনের জন্য তাঁরা বিখ্যাত।

শিক্ষা বিস্তারের ইতিহাসে শ্রীরামপুর ব্যাপটিস্ট মিশনের অবদান কি ছিল?

ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত শ্রীরামপুর ব্যাপটিস্ট মিশনের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ— 

  • ১। তাদের উদ্যোগেই সর্বপ্রথম বাংলা ও অপরাপর ২৬টি ভাষায় বাইবেলের অনুবাদ প্রকাশিত হয়।
  • ২। তারাই প্রথম ভারতে মুদ্রণ যন্ত্রের প্রবর্তন করেন।
  • ৩। প্রথম বাংলা সাপ্তাহিক সংবাদপত্র সমাচার দর্পন পত্রিকার প্রকাশ তাঁদেরই কৃতিত্ব।
  • ৪। তারা বাংলা ও ভারতের বিভিন্ন স্থানে বহু বিদ্যালয় স্থাপন করেন। এই মিশনের উদ্যোগেই ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুরে একটি কলেজ স্থাপিত হয়।

কবে কেন বারাণসী সংস্কৃত কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়?

১৭৯২ খ্রিস্টাব্দে জোনাথন ডানকান-এর উদ্যোগে ও বড়োলাট ওয়ারেন হেস্টিংস- এর সমর্থনে বারাণসী সংস্কৃত কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়।

হিন্দু সংস্কৃতির পীঠস্থান বারাণসীতে সংস্কৃত শিক্ষার উন্নতির জন্য তিনি এই কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।

কে কেন এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন?

উইলিয়াম জোনস ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এর পিছনে তার যে সমস্ত লক্ষ্য গুলি ছিল সেগুলি হল 

  • 📍১। সংস্কৃত ভাষায় লেখা প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্য গুলিকে ইংরেজিতে অনুবাদ করা। 
  • 📍২। ভারতের শিক্ষিত মানুষদের সঙ্গে ব্রিটিশের বোঝাপড়া করে তোলা।
  • 📍৩। ঔপনিবেশিক প্রশাসনকে আরো সুগম হয়ে কাজ করার উপযোগী করে তোলা।

নীলদর্পণ কে রচনা করেন? এর ইংরেজি অনুবাদক কে?

১৮৬০ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে দীনবন্ধু মিত্র 'নীল দর্পণ' রচনা করেন। নীলকরদের অকথ্য অত্যাচারে সোনার বাংলা কিভাবে শ্মশানে পরিণত হয়েছে তার মর্মান্তিক চিত্র এই নাটকে পরিস্ফুট। 

✅ ‘নীল দর্পণ' নাটকটির ইংরেজি অনুবাদ রেভারেন্ড জেমস্ লঙ- এর নামে প্রকাশিত হলেও ঐতিহাসিকদের মতে এই ইংরেজি অনুবাদটি করেছিলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত।

কেনারাম ও বেচারাম বলতে কী বোঝ? 

বিদেশী মহাজন ও ব্যবসায়ীরা সাঁওতাল পরগনায় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দোকান খুলে বসে। নিজেরা বেশি মুনাফা অর্জনের জন্য যখন সাঁওতালদের কাছ থেকে জিনিসপত্র কিনত তখন বেশি ওজনের বাটখারা ব্যবহার করত। যা কেনারাম নামে এবং যখন তারা সাঁওতালদের কোন জিনিস বিক্রি করত তখন কম ওজনের বাটখারা ব্যবহার করত। যা বেচারাম নামে পরিচিত ছিল।

সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ কী?

১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে রাজমহল ও মুর্শিদাবাদের সাঁওতালরা যে বিদ্রোহ করে তার

কারণগুলি হল-- 

  • ১। সাঁওতাল পরগনায় চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রবর্তন,
  • ২। ইজারাদারী ও মহাজনী শোষণ,
  • ৩। খাজনার পরিবর্তে নগদে রাজস্ব প্রদান, 
  • ৪। সাঁওতালদের নীল চাষে বাধ্য করা,
  • ৫। খ্রীষ্টান মিশনারীদের জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করা,
  • ৬। সাঁওতালদের মধ্যে ধর্মীয় উদ্দীপনা।

✅ ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে ৩০শে জুন ভাগনাডিহির মাঠে দশ হাজার সাঁওতাল সমবেত হয়ে বিদ্রোহ সংঘটিত করে।

✅ এই বিদ্রোহের কয়েকজন নেতার নাম হল –সিধু, কানু, চাঁদ, ভৈরব, বীর সিংহ, কালো প্রামাণিক, ডোমন মাঝি প্রমুখ।

পলিগার বিদ্রোহ বলতে কি বোঝ?

ষোড়শ শতকের তামিলনাড়ুর এক প্রভাবশালী কৃষক সম্প্রদায় পলিগার নামে পরিচিত ছিল। ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে আকর্টের নবাব ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীকে তিন্নেভেলি ও কর্ণাটকের রাজস্ব আদায়ের অধিকার দিলে সেখানকার পলিগার কৃষকরা ইংরেজদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ স্বরূপ বিদ্রোহ ঘোষণা করে। ১৮০৫ খ্রিস্টাব্দে এই বিদ্রোহ করে। 

✅ এই বিদ্রোহের অন্যতম নেতা ছিলেন পাণ্ডেয়ম কাটাবোম্বান।

পাইক বিদ্রোহ বলতে কি বোঝ?

পাইকরা ছিল স্থানীয় সৈনিক। যারা জমিদারের অধীনে সাধারণ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় ও বিদ্রোহের মোকাবিলা করত এবং বেতনের পরিবর্তে জমি ভোগ করত। ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে উড়িষ্যার খুরদার জমিদারকে জমিদারীচ্যুত করা হলে স্থানীয় পাইক কৃষকরা কর্মচ্যুত হলে, তার প্রতিবাদে পাইকদের সেনাপতি বিদ্যাধর মহাপাত্রের নেতৃত্বে পাইকরা বিদ্রোহ শুরু করে। শেষ পর্যন্ত চরম সরকারি অত্যাচারে এই বিদ্রোহ ব্যর্থ হয়।

কর্নওয়ালিস কোড কি?

লর্ড কর্নওয়ালিস সৎ ও দক্ষ প্রশাসক গড়ে তোলার জন্য এবং কোম্পানীর কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে যেসব নীতি ও কর্মপদ্ধতি প্রবর্তন করেন (১৭৯৩) তা কর্নওয়ালিস কোড নামে পরিচিত। 

✅ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল

  • ১। বাণিজ্যবিভাগ ও প্রশাসনিক বিভাগের পৃথকীকরণ, 
  • ২। কোম্পানীর কর্মচারীদের ব্যক্তিগত বাণিজ্য বন্ধ।

পত্তনী প্রথা বলতে কী বোঝ?

চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত অনুসারে নির্দিষ্ট দিনের রাজস্ব পরিশোধ ও বিনা জায়াসে রাজস্ব আদায়ের জন্য জমিদাররা তাদের জমিদারীকে কয়েকটি অংশে বিভক্ত করে নির্দিষ্ট পরিমাণ রাজস্ব প্রদানের বিনিময়ে কিছু ব্যক্তিকে বন্দোবস্ত দেন। এই ব্যবস্থা 'পত্তনী ব্যবস্থা' নামে পরিচিত। এবং পত্তনী প্রাপক 'পত্তনী দার' নামে পরিচিত।

✅ বর্ধমানের জমিদার তেজচন্দ্র প্রথম পত্তনী ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন।

দশসালা বন্দোবস্তু কী?

✅ ভূমি রাজস্ব নির্ধারণ সংক্রান্ত বিতর্কে লড কর্নওয়ালিস জন শোরের সুপারিশগুলি গ্রহণ করেন এবং জমিদারদের জমির মালিকানা দেবার পক্ষপাতী হন। বহু আলোচনার পর ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে বাংলা বিহারের এবং ১৭৯০ খ্রিস্টাব্দে উড়িষ্যার জমিদারদের সাথে তিনি দশ বছরের জন্য জমি বন্দোবস্ত করেন। এই ব্যবস্থা 'দশসালা বন্দোবস্তু' নামে পরিচিত।

গ্রান্ট শোর বিতর্ক কি?

✅ ভূমি রাজস্ব নির্ধারনের প্রশ্নে লর্ড কর্নওয়ালিশের সামনে দুটি প্রস্তাব আসে। 

তাঁর রাজস্ব বিভাগের সচিব স্যার জনশোর জানান যে, মোগল আমলে জমিদারই ছিল জমির মালিক তাই তাদের সাথে জমি বন্দোবস্ত করা উচিত। 

অন্যদিকে তার দলিল দস্তাবেজ বিভাগের প্রধান জেমস গ্রান্ট জানান যে, মুঘল আমলে জমির প্রকৃত মালিক ছিল সরকার। তাই বিস্তৃত তথ্য অনুসন্ধানের পর যে কারও সাথে জমি বন্দোবস্ত করা যেতে পারে। 

ভূমি রাজস্ব নির্ধারণ সংক্রান্ত এই বিতর্ক গ্রান্ট-শোর বিতর্ক নামে পরিচিত।

কে কবে কেন 'আমিনি কমিশন' গঠন করেন?

বাংলার গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস ১৭৭৬ খ্রিস্টাব্দে আমিনি কমিশন গঠন করেন। পাঁচশালা বন্দোবস্তের ত্রুটিগুলি দূর করতে এবং রাজস্ব সম্পর্কিত তথ্য অনুসন্ধানের জন্য হেস্টিংস 'আমিনি কমিশন' গঠন করেন।

প্রথম ইঙ্গ ব্রহ্ম যুদ্ধ কবে হয়? কোন সন্ধি দ্বারা এই যুদ্ধের অবসান হয়? ইয়ান্দার সন্ধির শর্তগুলি কি ছিল?

⏩ প্রথম ইঙ্গ ব্রহ্ম যুদ্ধ বড়োলাট আমহার্স্ট এর আমলে হয়।

✅ ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে ইয়াদাবুর সন্ধি দ্বারা যুদ্ধের অবসান ঘটে।

⏩ ইয়ান্দার সন্ধির শর্তগুলি হল-

  • ১। যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ বাবদ ব্রহ্মরাজ্য কোম্পানীকে এক কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দেয়।
  • ২। আরাকান, টেনাসোরিম, ইংরেজকে হস্তান্তর করেন। ৩। মণিপুরকে স্বাধীন রাজ্য হিসাবে স্বীকৃতি দেন।
  • ৪। ব্রহ্মরাজ্যে ইংরেজদের বাণিজ্যিক সুযোগসুবিধা স্বীকৃত হয়। 
  • ৫। রাজধানী আভায় একজন ইংরেজ দূত রাখতে ব্রহ্মরাজ্য স্বীকৃত হোন।

অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি কি? কোন দেশীয় রাজা প্রথম অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি গ্রহণ করেছিল?

ভারতে ইংরেজ আধিপত্য সুদৃঢ় করতে, দেশীয় রাজাদের কোম্পানীর উপর নির্ভরশীল করে তুলতে এবং ভারতের বিস্তীর্ণ বাজার দখল করতে ১৭৯৮ খ্রিস্টাব্দে বড়োলাট লর্ড ওয়েলেসলি দেশীয় রাজন্যবর্গের সাথে একটি চুক্তিতে আবদ্ধ হোন, যা অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি নামে পরিচিত। এই চুক্তি অনুসারে কোনো দেশীয় রাজা এই অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি গ্রহণ করলে কোম্পানী তাকে আভ্যন্তরীণ স্বাধীনতা দান করবে এবং বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করবে।

✅ হায়দ্রাবাদের নিজাম প্রথম অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি গ্রহণ করেন।

স্বত্ববিলোপ নীতি কি? স্বত্ববিলোপ নীতির মূল কথা হল -

কোম্পানী দ্বারা সৃষ্ট কোনো দেশীয় রাজ্যের রাজা অপুত্রক অবস্থায় মারা গেলে সেই রাজ্য কোম্পানী দখল করবে। ঐ রাজার কোনো উত্তরাধিকার গ্রহণ করা চলবে না। তবে কোম্পানী আশ্রিত রাজ্য এবং স্বাধীন দেশীয় রাজ্যগুলির কোম্পানী অনুমতিসাপেক্ষে পত্তক পুত্র গ্রহণ করতে পারে। এই নীতি দ্বারা তিনি সাতারা, সম্বলপুর, উদয়পুর, বারানসী, নাগপুর প্রভৃতি রাজ্য কোম্পানীর সাম্রাজ্যভুক্ত করেন।

চিলিয়ানওয়ালার যুদ্ধ কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়? এই যুদ্ধের ফলাফল কি হয়েছিল? 

১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দতে‌ ইংরেজ ও শিখদের মধ্যে। 

এই যুদ্ধে ইংরেজরা জয়লাভ করে এবং লাহোর সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়।

লাহোরের সন্ধির গুরুত্ব— 

  • ১। এই সন্ধি অনুসারে শতদ্রু নদীর দক্ষিণ তীরে ইংরেজ অঞ্চলগুলির ওপর ব্রিটিশ আধিপত্য স্বীকৃত হয়।
  • ২। জলন্ধর দোয়াব কোম্পানীর হাতে অর্পিত হয়। 
  • ৩। কোম্পানীকে যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ হিসাবে শিখদের দেড় কোটি টাকা দিতে বাধ্য করা হয়।
  • ৪। শিখ সেনাবাহিনীর সংখ্যা হ্রাস করা হয়।
  • ৫। লাহোর দরবারে একজন ইংরেজ রেসিডেন্ট রাখা হল।
  • ৬। ইংরেজ অনুমতি ব্যাতীত দরবার ও সেনাদলে ইউরোপীয়দের নিয়োগ বন্ধ হয়।

লাহোর সন্ধির গুরুত্ব? বা প্রথম ইঙ্গ শিখ যুদ্ধের ফলাফল কি ছিল?

  • ১। বিপাশা ও শতদ্রু মধ্যবর্তী জলন্ধর দোয়ারে ইংরেজদের হাতে সমর্পিত হয়। 
  • ২। ক্ষতিপুরণ হিসাবে শিখরা দেড়কোটি টাকা এবং সাম্রাজ্যের একাংশ ছেড়েদেন।
  • ৩। শিখ সৈন্য সংখ্যা হ্রাস করা হয়। 
  • ৪। লাহোরে একজন ইংরেজ রেসিডেন্ট রাখা হয়।

প্রথম ইঙ্গ-শিখ যুদ্ধ কবে হয় ?

শিখ বাহিনী শত নদী অতিক্রম করে ব্রিটিশ আক্রমণ করলে বড়োলাট লর্ড হার্ডিঞ্জ অমৃতসরের সন্ধি ভঙ্গের অভিযোগে শিখদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলে ১৮৪৫ খ্রিস্টাব্দে শুরু হয় প্রথম ইঙ্গ-শিখ যুদ্ধ। এই যুদ্ধে বিজয়ী ইংরেজ কর্তৃপক্ষ শিখদের অপমানজনক লাহোরের সন্ধি (১৮৪৬) স্বাক্ষরে বাধ্য করেন। 

দ্বিতীয় ইঙ্গ শিখ যুদ্ধ কবে হয়?

অপমানজনক লাহোরের সন্ধির প্রতিবাদে ১৮৪৮-৪৯ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় ইঙ্গ-শিখ যুদ্ধ শুরু হয়।

অমৃতসর সন্ধির তাৎপর্য আলোচনা কর?

এই সন্ধি স্বাক্ষরের দ্বারা-

  • ১। ইংরেজ কোম্পানী ও রতি-সিং এর মধ্যে মৈত্রী স্থাপিত হয়।
  • ২। শতদ্রু নদী রঞ্জিত সিংহ ও কোম্পানীর রাজ্যের সীমারেখা স্থির হয়।
  • ৩। রঞ্জিত সিং-এর অখিল শিখ সাম্রাজ্য গঠনের স্বপ্ন চিরতরে বিলীন হয়। 
  • ৪। শতদ্রু নদীর দক্ষিণ তীরের মিসল গুলি থেকে তার অধিকার চলে যায়।

কবে কাদের মধ্যে পুরন্দরের সন্ধি হয়?

কোলকাতার গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস ও মারাঠা পেশোয়া দ্বিতীয় মাধবরাও-এর মধ্যে ১৭৭৬ খ্রিস্টাব্দে পুরন্দরের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়।

১৭৭৩ খ্রিস্টাব্দে রেগুলেটিং অ্যক্টি অনুসারে মাদ্রাজ ও বোম্বাই কাউন্সিলের ওপর কোলকাতা কাউন্সিলের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়। 

কেন পুরন্দরের সন্ধি হয়?

কোলকাতার গভর্নর জেনারেল হেস্টিংস বোম্বাই কাউন্সিলের সাথে স্বাক্ষরিত সুরাটের সন্ধিকে বাতিল করে ১৭৭৬ খ্রিস্টাব্দে পেশোয়ার সাথে পুরন্দরের সন্ধি স্বাক্ষর করেন।

কবে কাদের মধ্যে পুনা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়? 

এর গুরুত্বগুলি লেখ- 

১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে মারাঠা পেশোয়া দ্বিতীয় বাজীরাও ইংরেজ গভর্নর লর্ড হেস্টিংসে (লর্ডময়রা) র মধ্যে পুনা চুক্তি সাক্ষর হয়। 

এই সন্ধির শর্তানুসারে 

  • (১) পেশোয়া দ্বিতীয় বাজীরাও এর পেশোয়া পদ বিলুপ্ত হয়, তিনি কোম্পানীর বেতনভোগীতে পরিণত হন।
  • (২) মারাঠা সাম্রাজ্যের একাংশ ইংরেজদের অধীনস্ত হয়।
  • (৩) অন্যান্য বহিঃশক্তির সাথে পেশোয়া যোগাযোগ স্থাপনে বিরত হতে যান হন।

বেসিনের সন্ধির গুরুত্ব কি?

এই সন্ধির ফলে—

  • ১। পেশোয়া সম্পূর্ণভাবে কোম্পানীর অধীনস্থ হয়ে পড়ে।
  • ২। যুদ্ধের ব্যয়ভার বহন করায় মারাঠা রাজকোষে ঘাটতি দেখা যায়।
  • ৩। মারাঠা সাম্রাজ্যের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কোম্পানী হস্তক্ষেপের সুযোগ পেয়ে যায়।
  • ৪। মারাঠাদের পতনে দাক্ষিণাত্যে ইংরেজ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত হয়। 
  • ৫। ইংরেজ সেনার ব্যয় নির্বাহের জন্য পেশোয়া তাঁর রাজ্যের একাংশ ছেড়ে দেন।
  • ৬। কোম্পানীর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়।

সলবাই-এর সন্ধির গুরুত্ব আলোচনা কর।

সলবাই-এর সন্ধির ফলে—

  • ১। দীর্ঘ সাত বছর ব্যাপী চলা প্রথম ইঙ্গ মারাঠা যুদ্ধের অবসান হয়।
  • ২। ইংরেজ কোম্পানীর মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। 
  • ৩। মারাঠাদের সাথে মৈত্রী স্থাপনের ফলে ইংরেজরা মহীশূর, ও ফরাসীদের বিরুদ্ধে শক্তি নিয়োগ করবার সুযোগ পায়। 
  • ৪। ভারতীয় রাজনীতিতে কোম্পানীর নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
  • ৫ । এই সন্ধির পর দীর্ঘ কুড়ি বছর দুই পক্ষের মধ্যে শান্তি বজায় থাকে।

কবে কাদের মধ্যে সলবাই-এর সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়? সলবাই সন্ধির শর্তগুলি কি ছিল? 

১৭৮২ খ্রিস্টাব্দে মারাঠা নেতা মহাদজি সিন্ধিয়ার মধ্যস্থতায় প্রথম ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধের অবসান ঘটে সলবাই-এর সন্ধির মাধ্যমে।

সন্ধির শর্তানুসারে— 

  • ১। ইংরেজ বা মাধবরাও নারায়ণ পেশোয়া বলে স্বীকার করবে।
  • ২। ইংরেজরা রঘুনাথ রাও এর পক্ষ ত্যাগ করবে।
  • ৩। রঘুনাথ রাওকে বার্ষিক তিন লক্ষ টাকা বৃত্তি দেওয়া হবে।
  • ৪। ইংরেজরা সলসেট, থানা, বোম্বাই-এর কিছু অংশ লাভ করবে।
  • ৫। মারাঠাদের সাম্রাজ্যভুক্ত ইংরেজ অধিকৃত অঞ্চল তারা ফিরিয়ে দেবে।

কবে কাদের মধ্যে সুরাটের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়? এই সন্ধির গুরুত্ব কি? 

গদিচ্যুত পেশোয়া রঘুনাথ রাও গদি ফিরে পাওয়ার আশায় বোম্বাই-এর ইংরেজ কর্তৃপক্ষের সাথে ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে সুরাটের সন্ধি স্বাক্ষরিত করে। 

এই সন্ধির দ্বারা-

  • ১। রঘুনাথ রাও মারাঠা জাতির স্বাধীনতা বিসর্জন দিতে উদ্যোগী হয়। 
  • ২। রঘুনাথ রাও মারাঠা জাতির ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়।
  • ৩। প্রথম ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধের পথ প্রশস্ত করে। 
  • ৪। রঘুনাথ রাও পুনরায় পেশোয়া পদে বসেন।

কবে কাদের মধ্যে প্রথম ইঙ্গ মহীশূর যুদ্ধ হয়? 

১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে হায়দার আলি ও ইংরেজ কোম্পানীর মধ্যে প্রথম ইঙ্গ মহীশূর 1767 যুদ্ধ সংঘটিত হয়।

কবে কাদের মধ্যে দ্বিতীয় ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ হয়?

১৭৮০ খ্রিস্টাব্দে মহীশূরের শাসক হায়নার আলির সাথে ইংরেজ কোম্পানীর দ্বিতীয় ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ সংঘটিত হয়।

কবে কাদের মধ্যে তৃতীয় ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ হয়? 

১৭৯০ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ কোম্পানী ও মহীশূরের শাসক টিপুর মধ্যে তৃতীয় ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ সংঘটিত হয়।

কবে কাদের মধ্যে চতুর্থ ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ হয়?

১৭৯১ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ কোম্পানী ও মহীশূর শাসক টিপুর মধ্যে চতুর্থ ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে টিপু পরাজিত ও নিহত হন।

কবে কার মধ্যে এলাহাবাদের দ্বিতীয় সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়?

১৭৬৫ খ্রীঃ আগস্ট মাসে কোম্পানী ও দিল্লীর বাদশাহ শাহ আলমের মধ্যে এলাহাবাদের দ্বিতীয় সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়।

এই সন্ধি অনুসারে—

  • (১) কোম্পানী কারা ও এলাহাবাদ প্রদেশ সহ ২৬ লক্ষ টাকা শাহ আলমকে প্রদান করে। 
  • (২) বিনিময়ে শাহ আলম কোম্পানীকে বাংলা, বিহার উড়িষ্যা রাজস্ব সংক্রান্ত অধিকার বা দেওয়াণী প্রদান করে। 
  • (৩) কোম্পানী সাহায্য দানের প্রতিশ্রুতি দেন।

কবে কার মধ্যে এলাহাবাদের প্রথম সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়? 

১৭৬৫ খ্রীঃ মে মাসে কোম্পানী ও অযোধ্যার নবাব সুজাউদ্দৌলার মধ্যে এলাহাবাদের প্রথম সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়।

এই সন্ধি অনুসারে—

  • (১) সুজাউদ্দৌলাকে তার রাজ্য ফিরিয়ে দেওয়া হয়। 
  • (২) তিনি যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫০ লক্ষ টাকা এবং কারা ও এলাহাবাদ প্রদেশ কোম্পানীকে দেন। 
  • (৩) সুজাউদ্দৌলা কোম্পানীর সাথে আত্মরক্ষা মূলক মিত্রতা নীতি স্বীকার করেন।

বক্সার যুদ্ধকে পলাশি যুদ্ধ থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয় কেন?

  • (১) পলাশির যুদ্ধের ফলে ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের যে ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল বক্সার যুদ্ধে তা সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। 
  • (২) পলাশির যুদ্ধে জয় ছিল আকস্মিক ও অনায়াসলব্ধ, বক্সার যুদ্ধ ছিল চূড়ান্ত ফল নির্ণয়কারী পরিকল্পিত যুদ্ধ।
  • (৩) পলাশির যুদ্ধ ছিল কয়েকটি কামানের লড়াই। বক্সার যুদ্ধ ছিল উভয়পক্ষে শূল শক্তির লড়াই। 
  • (৪) পলাশির যুদ্ধে শুধুমাত্র বাংলার নবাব পরাজিত, বক্সার যুদ্ধে বাংলা, অযোধ্যা ও দিল্লীর শাসকের পরাজয়।
  • (৫) পলাশির যুদ্ধে কোম্পানী কোন বৈধ আর্থিক অধিকার পায় নি, বক্সার যুদ্ধে কোম্পানী মোগল বাদশাহর কাছ থেকে দেওয়ানী লাভ করে।

কবে কেন কলকাতার নাম আলিনগর রাখা হয়?

১৭৫৬ খ্রীঃ ২০ শে জুন সিরাজউদ্দৌলা কলকাতা দখল করেন। এবং আলিবর্দির নাম অনুসারে কলকাতার নাম দেন আলিনগর।

কবে কাদের মধ্যে আলিনগরের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়?

১৭৫৭ খ্রীঃ ৭ ই ফেব্রুয়ারি বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলা ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর মধ্যে আলিনগরের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়।

আলিনগরের গুরুত্ব আলোচনা কর।

আলিনগরের সন্ধির গুরুত্ব হল—

  • (১) ইংরেজরা বিনা শুল্কে বাণিজ্যাধিকার পায়
  • (২) দুর্গ নির্মাণের অনুমতি পায়, 
  • (৩) নিজ নামাঙ্কিত মুদ্রা প্রচলনের অধিকার পায়
  • (৪) সিরাজকে যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ দিতে হয়, 
  • (৫) ইংরেজদের প্রভাব ও প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পায়।

অন্ধকূপ হত্যা (Black Hole Tragedy) ঘটনা কি?

১৭৫৬ খ্রীঃ সিরাজ কলকাতা আক্রমণ করেন এবং ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ অধিকার করেন। ইংরেজ কর্মচারী হলওয়েল অভিযোগ করেন যে, ফোট উইলিয়াম দুর্গ দখলের পর সিরাজউদ্দৌলা ১৪৬ জন বন্দি ইংরেজ সৈন্যকে ১৮ ফুট লম্বা ও ১৪ ফুট ১০ ইঞ্চি চওড়া একটি ঘরে বন্দি করে রাখেন। পরদিন শ্বাসরুদ্ধ হয়ে ১২৩ জন সৈন্য মারা যান। এই ঘটনা ‘অন্ধকূপ হত্যা' নামে পরিচিত।

গান্ধীজী কেন লবন আইন ভঙ্গ করার কর্মসুচী গ্রহন করেন? এই আন্দোলনের গুরুত্ব লেখ?

আইন অমান্য আন্দোলনের অন্যতম প্রধান কর্মসূচি ছিল লবণ আইন, কর প্রদান আইন প্রভৃতি সরকারি আইন অমান্য করা। এই কর্মসূচি ভিত্তিতে গান্ধীজী ১৯৩০ খ্রীঃ ১২ ই মার্চ সবরমতি আশ্রম থেকে ৭৮ জন সহযোগিকে নিয়ে ২০০ মাইল দূরে সমুদ্র উপকূলে উপস্থিত হয়ে সমুদ্রের জল থেকে লবণ তৈরি করে লবণ আইন ভঙ্গ করেন। যদিও আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছিল।

আন্দোলনের গুরুত্ব

আপাত দৃষ্টিতে এই আন্দোলন ব্যর্থ হলেও ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এই আন্দোলনের গুরুত্ব কম ছিল না। কারন-

  • ১. এই আন্দোলন ভারতীয় সংগ্রামকে সর্বভারতীয় গণ আন্দোলনে নিয়ে যায়।
  • ২. এই আন্দোলনের চাপেই ব্রিটিশ সরকার গান্ধি-আরউইন চুক্তিতে কংগ্রেসকে সম মর্যাদা দিতে বাধ্য হয়।
  • ৩. আন্দোলনের ফলে ব্রিটিস কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারে যে নিছক দমন নীতির মাধ্যমে জাতীয় আন্দোলন প্রশমিত করা যাবে না এবং শাসনতান্ত্রিক সংস্কার বিলম্বিত করা বিপদজনক হবে।

প্রাক্ ইতিহাস কথাটি প্রথম কে ব্যবহার করেন? 

১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে ইংরাজি ভাষায় 'প্রি-হিস্টোরি' শব্দটি প্রথম ব্যবহৃত হয়৷ ডানিয়েল উইলসন (Daniel Wilson) তাঁর একটি গ্রন্থে প্রথম এই শব্দটির বিধিবদ্ধ ব্যবহার করেন৷ এর কিছু আগে ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দে টোরনাল (Tournal) পৃথিবীর মানব যুগকে প্রাক্ ঐতিহাসিক এবং ঐতিহাসিক এই দুই পর্যায়ে বিভক্ত করেন৷ ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে স্যার জন লুবক (Sir John Lubbock) তাঁর এক গ্রন্থে প্রাক ইতিহাসের ব্যাখ্যা দেন

দক্ষিণ ভারতে চোল শক্তি বর্ণনা করো।

দক্ষিণ ভারতেও বেশ কিছু আঞ্চলিক শক্তির বিকাশ হয়েছিল। পল্লব, পাণ্ড্য ও বিশেষত চোলরা শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। কাবেরী ও শাখানদীগুলির বদ্বীপকে ঘিরে চোল রাজ্য গড়ে উঠেছিল। সেখানকার রাজা মুট্টাবাইয়াকে সরিয়ে বিজয়ালয় চোল রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। থাঞ্জাভুর বা তাঞ্জোর নামে এক নতুন নগরী তৈরি হয় যা চোলদের রাজধানী ছিল। বিজয়ালয়ের সুযোগ্য উত্তরসুরিরা রাজাকে আরও সম্প্রসারিত করেন। দক্ষিণের পাণ্ড্য ও উত্তরের পল্লব অঞ্চল চোলদের দখলে আসে। ৯৮৫ সালে প্রথম রাজরাজ বর্তমান কেরল, তামিলনাড়ু ও কর্ণাটকের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে চোল প্রতিপত্তি বৃদিধ করেন। তাঁর পুত্র প্রথম রাজেন্দ্র চোল কল্যাণীর চালুক্যশক্তিকে পরাজিত করেন। বাংলার পালবংশের বিরুদ্ধে এক অভিযানে গঙ্গা নদীর তীরে পাল রাজাকে হারিয়ে তিনি গঙ্গাইকোণ্ডচোল উপাধি নেন। প্রথম রাজরাজ ও রাজেন্দ্র চোল দুজনেই দক্ষ নৌবাহিনী তৈরি করেন। তার ফলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে ভারতীয় বাণিজ্যকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখা চোলদের পক্ষে সম্ভব হয়।

ত্রি-শক্তি সংগ্রামের কারণগুলি

  • (১) হর্ষবর্ধন উত্তর ভারতে যে রাজনৈতিক ও সামাজিক আধিপত্য বিস্তার করেছিল তার সিংহভাগ দখল করতে পাল-প্রতিহার-রাষ্ট্রকূটরা দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়। 
  • (২) অষ্টম শতকের মাঝামাঝি সময়ে প্রতিবেশী আঞ্চলিক শক্তিগুলি কনৌজে আধিপত্য স্থাপন করে হর্ষবর্ধনের মতো উত্তর ভারতের হৃতগৌরব ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট হয়। 
  • (৩) উত্তর ভারতের প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র কনৌজকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী এলাকাগুলি সমৃদ্ধিশালী হয়েছিল। আর্থিক দিক থেকে এই লোভ সামলাতে না পেরে তারা দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়। 
  • (৪) কনৌজের ভৌগোলিক অবস্থা ও খনিজ সম্পদ প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলিকে প্রলুব্ধ করে। উর্বরা গাঙ্গেয় অঞ্চল দখল ও কর্তৃত্ব স্থাপনের নেশায় তারা দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়।

রাওলাট সত্যাগ্রহ কী?

অত্যাচারমূলক রাওলাট আইনের প্রতিবাদে গান্ধিজির সভাপতিত্বে ১৯১৯ খ্রিঃ ‘সত্যাগ্রহ সভা’ প্রতিষ্ঠিত হয়। গান্ধিজির নেতৃত্বে সারা দেশ জুড়ে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। ওই বছরের ৬ই থেকে ৮ই এপ্রিল সত্যাগ্রহ সপ্তাহ পালন করা হয়। রাওলাট আইন বিরোধী এই আন্দোলন রাওলাট সত্যাগ্রহ নামে পরিচিত।

কাকে কেন ‘কাইজার-ই-হিন্দ' উপাধি দেওয়া হয়?

যুদ্ধকালীন সময়ে ব্রিটিশ সরকারকে বিনা শর্তে নানা ভাবে সাহায্য ও সহযোগিতা করার জন্য গান্ধিজিকে ‘কাইজার-ই-হিন্দ' উপাধি দেওয়া হয়।

রাওলাট আইন কী?

রাওলাট কমিটির সুপারিশ অনুসারে ব্রিটিশ ভারত সরকার ১৯১৯ খ্রিঃ সন্ত্রাস দমন আইন হিসেবে রাওলাট আইন পাশ করে। এই আইনে বলা হয়—

  • (১) সন্দেহ ভাজন যে-কোনও ব্যক্তির বাড়ির তল্লাশি করা এবং তাকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য আটক করা যাবে। 
  • (২) কোনো প্রকার সাক্ষ্য প্রমাণের তোয়াক্কা না করে তার বিচার করা হবে। 
  • (৩) নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা যাবে না। 
  • (৪) সংবাদপত্রের কণ্ঠ রুদ্ধ করার ব্যবস্থা করা হয়।

রাওলাট আইনের শর্তাবলি

ভারতের ব্রিটিশবিরোধী জাতীয়তাবাদ, গণ-আন্দোলন, বিপ্লবী কার্যকলাপ প্রভৃতি ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে কুখ্যাত রাওলাট আইনে বিভিন্ন ধারা যুক্ত করা হয়। এই আইনে বলা হয় যে—

  • প্রচারকার্য দন্ডনীয়: সরকার-বিরোধী যে কোনো প্রচারকার্য দণ্ডনীয় অপরাধ বলে গণ্য করা হবে।
  • বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার: সন্দেহভাজন যে-কোনো ব্যক্তিকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করা যাবে। গ্রেপ্তারের পর বিনা বিচারে তাদের অনির্দিষ্টকাল আটক রাখা বা নির্বাসন দেওয়া যাবে।
  • বাড়ি তল্লাশি: সরকার বিনা পরোয়ানায় যে-কোনো ব্যক্তির বাড়ি তল্লাশি করতে পারবে।
  • বিচারকার্য: বিশেষ আদালতে সন্দেহভাজন অপরাধীর বিচার হবে। বিচারকগণ কোনো জুরির সহায়তা এবং কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ ছাড়াই বিচার করতে পারবে।
  • সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ: কোনো সংবাদপত্র স্বাধীনভাবে সংবাদ পরিবেশন করতে পারবে না।
  • নিষেধাজ্ঞা: রাওলাট আইনে অভিযুক্ত ব্যক্তি রাজনীতি, শিক্ষা বা ধর্মসংক্রান্ত কোনো কার্যাবলিতে অংশগ্রহণ করতে পারতেন না। তা ছাড়া এই আইনে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির মুক্তির জন্য অর্থ জমা দিতে হত।
  • মুক্তির জন্য অর্থদন্ড: রাওলাট আইনে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির মুক্তির জন্য অর্থ জমা দিতে হত।
  • আপিলে নিষেধাজ্ঞা: রাওলাট আইনের দ্বারা যে-সব বিচারকার্য সম্পন্ন হবে, সেই বিচারের রায়ের বিরুদ্ধে কোনো উচ্চতর আদালতে আপিল মামলা দায়ের করা যাবে না।

Tags:
Next Post Previous Post

You May Also Like

Editor
ইতিহাস পাঠশালা

যা কিছু প্রাচীন, যা কিছু অতীত তাই হল ইতিহাস৷ ইতিহাস পাঠশালা হল ইতিহাসের সংক্ষিপ্ত, উত্তরধর্মী, প্রবন্ধ মূলক পাঠ সহায়ক একটি ব্লগ৷ মূলত ইতিহাস বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরাই এই ব্লগের প্রধান লক্ষ্য৷