সুলতানি আমলের কবি, সাহিত্যিক, লেখক ও তাদের গ্রন্থাদির বর্ণনা

সুলতানি আমলে ভারতীয় সাহিত্য: লেখক, গ্রন্থ ও ভাষার এক বিশদ চিত্র

দিল্লি সুলতানি আমল (১২০৬-১৫২৬ খ্রিস্টাব্দ) ছিল ভারতে এক নতুন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ধারার উন্মোচনের সময়। এই সময়ে ফার্সি ভাষা রাজভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে, যা সাহিত্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। একই সাথে, স্থানীয় ভারতীয় ভাষাগুলিও বিকাশ লাভ করে এবং বহু ঐতিহাসিক, কবি ও সাহিত্যিক তাদের সৃজনশীলতা দিয়ে এই যুগকে সমৃদ্ধ করেন। এই আমলে পার্সী, আরবি, তুর্কি এবং স্থানীয় ভারতীয় ভাষার সংমিশ্রণে এক নতুন ইন্দো-ইসলামিক সাহিত্যের সৃষ্টি হয়।


১. পার্সী (ফার্সি) সাহিত্যের বিকাশ:

সুলতানি আমলে ফার্সি ছিল রাজভাষা এবং প্রশাসনের ভাষা। তাই এই সময় ফার্সি সাহিত্যের ব্যাপক প্রসার ঘটে। বহু মূল্যবান ঐতিহাসিক গ্রন্থ, কাব্য, নীতিশাস্ত্র ও ধর্মীয় সাহিত্য রচিত হয়।


   ঐতিহাসিক গ্রন্থ ও লেখক:

       মিনহাজ-উস-সিরাজ জুজানি (Minhaj-us-Siraj Juzjani):

           সময়কাল: মামলুক বংশের সুলতান নাসিরুদ্দিন মাহমুদের সমসাময়িক।

           গ্রন্থ: "তবকাত-ই-নাসিরী" (Tabaqat-i-Nasiri)।

           গুরুত্ব: এটি সুলতান নাসিরুদ্দিন মাহমুদের নামে উৎসর্গীকৃত এবং ১২৬০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ইসলামিক বিশ্বের (বিশেষত ভারতের) ইতিহাসের একটি প্রামাণ্য উৎস। এতে মুহাম্মদ ঘোরীর ভারত আক্রমণ থেকে শুরু করে মামলুক সুলতানদের ইতিহাস, বিশেষ করে নাসিরুদ্দিন মাহমুদের সময় পর্যন্ত বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। এটি এই সময়ের মূলধারার ঐতিহাসিক তথ্যের অন্যতম প্রধান উৎস।

       আমীর খসরু (Amir Khusrau):

           উপাধি: "ভারতের তোতাপাখি" (Tuti-i-Hind)।

           সময়কাল: দিল্লি সুলতানির সবচেয়ে উজ্জ্বল সাহিত্যিক ব্যক্তিত্ব। তিনি বলবন থেকে গিয়াসউদ্দিন তুঘলক পর্যন্ত প্রায় ৭ জন সুলতানের পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেন।

           গুরুত্ব: তিনি একাধারে কবি, সঙ্গীতজ্ঞ ও ঐতিহাসিক ছিলেন। তিনি ফার্সি ও হিন্দুস্তানী (হিন্দভী) উভয় ভাষাতেই লিখতেন এবং খৈয়াল ও কওয়ালীর জন্মদাতা হিসেবে পরিচিত। ভারতীয় রাগ-রাগিণী ও পার্সী রাগ-রাগিণীর সংমিশ্রণে বেশ কিছু নতুন রাগ সৃষ্টি করেন (যেমন, ঘোড়া, সনম, ইয়ামন কল্যাণ)।

           উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলী:

               "খাজাইন-উল-ফুতুহ" (Khazain-ul-Futuh) বা "তারিখ-ই-আলাই" (Tarikh-i-Alai): আলাউদ্দিন খলজীর দাক্ষিণাত্য অভিযান ও অন্যান্য বিজয়ের বিস্তারিত বিবরণ।

               "তুঘলক নামা" (Tughlaq Nama): গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের সিংহাসন আরোহণ এবং তুঘলক বংশের প্রাথমিক ইতিহাস।

               "মিফতাহ-উল-ফুতুহ" (Miftah-ul-Futuh): জালালউদ্দিন খলজীর সামরিক বিজয়ের উপর রচিত কাব্য।

               "কিরান-উস-সাদাইন" (Qiran-us-Sadain): বুগরা খান (বাংলার শাসক) ও তার পুত্র কায়কোবাদের (দিল্লি সুলতান) মিলন নিয়ে রচিত কাব্য।

               "আশিকা" (Ashika), "নূহ সিপাহর" (Nuh Sipihr), "লাইলা মজনু" (Laila Majnun) ও "দেবল রানী খিজির খান" (Dewal Rani Khizr Khan): এগুলি তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ।

               ভাষা: তিনি তাঁর লেখায় স্থানীয় ভারতীয় শব্দ এবং প্রবাদ ব্যবহার করে পার্সী ও হিন্দুস্তানী ভাষার সংমিশ্রণে একটি নতুন ধারা তৈরি করেন।

       জিয়াউদ্দিন বারনী (Ziauddin Barani):

           সময়কাল: মুহাম্মদ বিন তুঘলক ও ফিরোজ শাহ তুঘলকের সমসাময়িক।

           গুরুত্ব: তিনি ছিলেন একজন বিখ্যাত ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদ।

           উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলী:

               "তারিখ-ই-ফিরোজ শাহী" (Tarikh-i-Firoz Shahi): গিয়াসউদ্দিন বলবন থেকে ফিরোজ শাহ তুঘলকের রাজত্বের প্রথম ছয় বছর পর্যন্ত দিল্লি সুলতানদের ইতিহাস নিয়ে রচিত। এটি সুলতানি আমলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও নির্ভরযোগ্য উৎস।

               "ফতোয়া-ই-জাহান্দারী" (Fatawa-i-Jahandari): রাষ্ট্রনীতি ও মুসলিম শাসকের আদর্শ আচরণবিধি সংক্রান্ত একটি গ্রন্থ, যা মধ্যযুগীয় ভারতের রাজনৈতিক চিন্তাধারার উপর আলোকপাত করে।

       শামস-ই-সিরাজ আফিফ (Shams-i-Siraj Afif):

           গ্রন্থ: "তারিখ-ই-ফিরোজ শাহী" (Tarikh-i-Firoz Shahi)।

           গুরুত্ব: জিয়াউদ্দিন বারনীর "তারিখ-ই-ফিরোজ শাহী" যেখানে শেষ হয়েছিল, আফিফের গ্রন্থ সেখান থেকে ফিরোজ শাহ তুঘলকের রাজত্বের শেষ পর্যন্ত বিস্তারিত বিবরণ দেয়। এটি ফিরোজ শাহের জনহিতকর কাজ, প্রশাসনিক সংস্কার এবং বিভিন্ন ঘটনার এক মূল্যবান চিত্র তুলে ধরে।

       ইসামি (Isami):

           সময়কাল: দক্ষিণ ভারতের বাহমনি সুলতান আলাউদ্দিন বাহমন শাহের পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেন।

           গ্রন্থ: "ফুতুহ-উস-সালাতিন" (Futuh-us-Salatin)।

           গুরুত্ব: এটি ভারতে মুসলিম শাসনের ইতিহাস নিয়ে লেখা একটি কাব্যগ্রন্থ, যা গজনীর মাহমুদ থেকে মুহাম্মদ বিন তুঘলকের রাজত্ব পর্যন্ত প্রায় ৪০ হাজার শ্লোকে রচিত হয়েছে। এটি দাক্ষিণাত্যের দিক থেকে সুলতানি আমলের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস।

       ইয়াহিয়া বিন আহমদ সিরহিন্দি (Yahya bin Ahmad Sirhindi):

           গ্রন্থ: "তারিখ-ই-মুবারক শাহী" (Tarikh-i-Mubarak Shahi)।

           গুরুত্ব: এই গ্রন্থটি সৈয়দ বংশের সুলতান মুবারক শাহকে উৎসর্গীকৃত এবং সৈয়দ বংশের ইতিহাসের উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস।

       ইবন বতুতা (Ibn Battuta):

           জাতীয়তা: মরক্কোর পর্যটক।

           সময়কাল: মুহাম্মদ বিন তুঘলকের রাজত্বকালে ভারতে আসেন এবং প্রায় ৮ বছর দিল্লির প্রধান কাজী (বিচারক) হিসেবে কাজ করেন।

           গ্রন্থ: "কিতাব-উর-রিহলা" (Kitab-ur-Rihla) বা শুধু "রিহলা" (Rihla)।

           গুরুত্ব: এটি তাঁর ভারত ভ্রমণ অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা একটি ভ্রমণবৃত্তান্ত। এতে মুহাম্মদ বিন তুঘলকের প্রশাসন, সামাজিক জীবন, বিচার ব্যবস্থা, বাণিজ্য ও ভারতের সাংস্কৃতিক অবস্থার এক চমৎকার ও জীবন্ত বর্ণনা পাওয়া যায়। যদিও তিনি ঐতিহাসিক নন, তার ভ্রমণকাহিনি সুলতানি যুগের সমাজ ও সংস্কৃতির উপর আলোকপাত করে।


   অন্যান্য পার্সী সাহিত্য:

       ধর্মীয় ও নীতিশাস্ত্র: বহু সুফি সাধক পার্সী ভাষায় আধ্যাত্মিক ও নীতিমূলক গ্রন্থ রচনা করেন, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে সুফিবাদের আদর্শ প্রচারে সহায়ক হয়েছিল।

       অভিধান: সুলতানি আমলের শেষের দিকে ফার্সি-হিন্দী অভিধানও রচিত হতে শুরু করে, যা ভাষার মিশ্রণকে উৎসাহিত করে।


২. উর্দু সাহিত্যের বিকাশ:

দিল্লি সুলতানি আমলে ফার্সি, আরবি, তুর্কি এবং স্থানীয় খাড়িবোলি (দিল্লির আশপাশের উপভাষা) ভাষার সংমিশ্রণে একটি নতুন ভাষার জন্ম হয়, যা প্রাথমিকভাবে "রেখতা" বা "হিন্দভী" নামে পরিচিত ছিল এবং পরে "উর্দু" নামে পরিচিত হয়।


   আমীর খসরুর ভূমিকা: আমীর খসরু প্রায়শই উর্দু ভাষার প্রথম কবি হিসেবে বিবেচিত হন। তিনি তার কবিতায় পার্সী শব্দ এবং খাড়িবোলি শব্দের সংমিশ্রণ ঘটিয়েছিলেন। যদিও তার সময়ে উর্দু তার পূর্ণাঙ্গ রূপ নেয়নি, তবে তিনিই এই ভাষার ভিত্তি স্থাপন করেন। উর্দু "শিবিরের ভাষা" (Language of the Camp) হিসেবে পরিচিতি লাভ করে, কারণ এটি সেনাবাহিনীতে বিভিন্ন ভাষাগত মানুষের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হত।


৩. আঞ্চলিক ভাষার সাহিত্যের বিকাশ:

যদিও ফার্সি ছিল রাজভাষা, সুলতানি আমলে আঞ্চলিক ভাষাগুলির (যেমন বাংলা, মারাঠি, গুজরাটি, মাগধী, মৈথিলী ইত্যাদি) সাহিত্যেরও উল্লেখযোগ্য বিকাশ ঘটে। সুফি ও ভক্তি আন্দোলন এই ভাষাগুলির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কারণ এই আন্দোলনের প্রচারকরা সাধারণ মানুষের ভাষায় ধর্মীয় ও দার্শনিক বার্তা ছড়িয়ে দিতেন।


   বাংলার সাহিত্য:

       পৃষ্ঠপোষকতা: ইলিয়াস শাহী এবং হুসেন শাহী বংশের সুলতানরা (যদিও হুসেন শাহী বংশ কিছুটা পরে আসে, তবে সুলতানি আমলের মধ্যেই পড়ে এবং বাংলা সাহিত্যের বিকাশে তাদের অবদান অপরিমেয়) বাংলা ভাষার প্রতি বিশেষ আগ্রহী ছিলেন। ইলিয়াস শাহী সুলতানরা বাংলা ভাষার পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ বাংলায় বহু গ্রন্থ রচনায় উৎসাহ দেন এবং ফার্সী ও আরবি সাহিত্য অনুবাদে সহায়তা করেন।

       কীর্তিবাস ওঝা (Krittibas Ojha):

           গ্রন্থ: "শ্রীরাম পাঞ্চালী" বা "কৃত্তিবাসী রামায়ণ" (Krittivasi Ramayana)।

           গুরুত্ব: পঞ্চদশ শতকে সুলতান নাসিরউদ্দিন মাহমুদ শাহের (ইলিয়াস শাহী) সময়ে তিনি রামায়ণ সংস্কৃৃত থেকে বাংলায় অনুবাদ করেন, যা বাংলার ঘরে ঘরে জনপ্রিয়তা লাভ করে। এটি বাংলা সাহিত্যের একটি মাইলফলক।

       মালাধর বসু (Maladhar Basu):

           গ্রন্থ: "শ্রীকৃষ্ণবিজয়" (Sri Krishna Vijaya)।

           গুরুত্ব: সুলতান রুকুনউদ্দিন বরবক শাহের (ইলিয়াস শাহী) পৃষ্ঠপোষকতায় তিনি ভাগবত পুরাণ বাংলায় অনুবাদ করেন। এই গ্রন্থটি ছিল বাংলায় প্রথম অনুবাদ কর্মগুলির মধ্যে অন্যতম এবং এর জন্য তাকে "গুণরাজ খান" উপাধি দেওয়া হয়েছিল।

       চণ্ডীদাস (Chandidas):

           সময়কাল: তার সঠিক সময়কাল নিয়ে বিতর্ক থাকলেও, তাকে আদি মধ্যযুগের (সুলতানি আমলের শুরুর দিক) একজন গুরুত্বপূর্ণ কবি হিসেবে ধরা হয়।

           গুরুত্ব: তার "শ্রীকৃষ্ণকীর্তন" কাব্য বাংলা সাহিত্যের একটি অন্যতম প্রাচীন নিদর্শন। এতে রাধা-কৃষ্ণের প্রেমলীলা বর্ণিত হয়েছে।

       মঙ্গল কাব্য: সুলতানি আমলে মনসামঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল, ধর্মমঙ্গল প্রভৃতি মঙ্গল কাব্যগুলি রচিত হতে শুরু করে, যা বাংলার লোকজীবন ও দেব-দেবী কেন্দ্রিক বিশ্বাসকে তুলে ধরে।

       বৈষ্ণব সাহিত্য: যদিও চৈতন্যদেব ও তার শিষ্যদের সৃষ্ট বৈষ্ণব সাহিত্য মূলত সুলতানি আমলের শেষ ভাগ ও মুঘল আমলের শুরুর দিকে বিকশিত হয়, তবে এর বীজ এই আমলেই রোপিত হয়েছিল।


   অন্যান্য আঞ্চলিক সাহিত্য:

       মারাঠি সাহিত্য: জ্ঞানেশ্বর (১৩শ শতক), নামদেব (১৩শ-১৪শ শতক) প্রমুখ ভক্তি সাধকরা মারাঠি ভাষায় বহু অভঙ্গ (ভক্তিগীতি) রচনা করেন।

       গুজরাটি সাহিত্য: নরসিংহ মেহতা (১৫শ শতক) গুজরাটি ভাষায় ভক্তিগীতি রচনা করেন।

       মৈথিলী সাহিত্য: বিদ্যাপতি (১৪শ-১৫শ শতক) মৈথিলী ও ব্রজবুলি ভাষায় রাধা-কৃষ্ণের প্রেমলীলা নিয়ে পদাবলী রচনা করেন, যা বাংলার বৈষ্ণব সাহিত্যকেও প্রভাবিত করে।


৪. সাহিত্যের গুরুত্ব ও তাৎপর্য:

সুলতানি আমলের সাহিত্য ভারতীয় উপমহাদেশের সাংস্কৃতিক ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় উন্মোচন করে।


   ভাষাগুলির সমন্বয়: পার্সী, আরবি ও স্থানীয় ভারতীয় ভাষার সংমিশ্রণে নতুন সাহিত্যিক ধারা ও ভাষার (যেমন উর্দু) জন্ম হয়।

   ঐতিহাসিক তথ্যের উৎস: বহু ঐতিহাসিক গ্রন্থ সুলতানি যুগের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার এক মূল্যবান চিত্র তুলে ধরে।

   ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক সাহিত্যের বিকাশ: সুফি ও ভক্তি আন্দোলনের হাত ধরে আঞ্চলিক ভাষাগুলিতে ধর্মীয় ও দার্শনিক সাহিত্যের ব্যাপক প্রসার ঘটে, যা সাধারণ মানুষের কাছে ধর্মকে আরও সহজলভ্য করে তোলে।

   সংস্কৃতির আদান-প্রদান: সুলতানি সাহিত্য ভারতে এক নতুন ইন্দো-ইসলামিক সংস্কৃতির জন্ম দেয়, যা পরবর্তীকালে মুঘল যুগে আরও বিকশিত হয়।

   আঞ্চলিক ভাষার অগ্রগতি: এই সময় আঞ্চলিক ভাষাগুলির পৃষ্ঠপোষকতা এবং সেগুলিতে সাহিত্য রচনার ফলে ভারতীয় ভাষার ভিত্তি আরও মজবুত হয়।


উপসংহার:

দিল্লি সুলতানি আমল কেবল রাজনৈতিক পালাবদলের যুগ ছিল না, বরং এটি ছিল ভারতের সাহিত্য ও সংস্কৃতির এক রূপান্তরকালীন সময়। পার্সী সাহিত্য তার সমৃদ্ধি বজায় রেখেছিল, অন্যদিকে উর্দু ভাষা একটি স্বতন্ত্র পরিচিতি লাভ করতে শুরু করে। একই সাথে, আঞ্চলিক ভাষাগুলিতে রচিত সাহিত্যগুলি সাধারণ মানুষের জীবনের গভীরে প্রবেশ করে এবং ভারতীয় সাহিত্যের বহু-মাত্রিক রূপকে সমৃদ্ধ করে। এই সময়ের সাহিত্যিক কর্মগুলি আজও ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গবেষণার এক মূল্যবান সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হয়।