ধর্মস্থির ও কণ্টকশোধন কী?

অর্থশাস্ত্রে দুটি প্রধান ধরনের বিচারালয়ের উল্লেখ রয়েছে। ধর্মস্থির (দেওয়ানি আদালত) এবং কণ্টকশোধন (ফৌজদারি আদালত)...

অর্থশাস্ত্রে দুটি প্রধান ধরনের বিচারালয়ের উল্লেখ রয়েছে, যথা ধর্মস্থির এবং কণ্টকশোধন। এই দুটি বিচারালয় মৌর্য সাম্রাজ্যের বিচার ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। যা ন্যায়বিচার এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সাহায্য করত।

ধর্মস্থির ও কণ্টকশোধন অর্থশাস্ত্রের দুই প্রধান বিচারালয়

ধর্মস্থির (দেওয়ানি আদালত):

ধর্মস্থির ছিল দেওয়ানি আদালত। যেখানে ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং আর্থিক বিরোধের মীমাংসা করা হত। এই আদালত মূলত সম্পত্তি, বিবাহ, উত্তরাধিকার, চুক্তি, ঋণ এবং অন্যান্য দেওয়ানি বিষয়ে বিচার করত। ধর্মস্থির আদালতের বিচারকরা শাস্ত্র এবং প্রচলিত আইন অনুযায়ী ন্যায়বিচার প্রদান করতেন। এই আদালতের মূল লক্ষ্য ছিল সমাজের শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং ন্যায়সঙ্গত বিচার নিশ্চিত করা। 


কণ্টকশোধন (ফৌজদারি আদালত):

কণ্টকশোধন ছিল ফৌজদারি আদালত। যেখানে অপরাধমূলক কার্যকলাপের বিচার করা হত। এই আদালত হত্যাকাণ্ড, চুরি, প্রতারণা, দুর্নীতি এবং অন্যান্য অপরাধমূলক মামলার বিচার করত। কণ্টকশোধন আদালতের বিচারকরা অপরাধীদের শাস্তি প্রদান এবং আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কঠোর ভূমিকা পালন করতেন। এই আদালতের মূল উদ্দেশ্য ছিল অপরাধ দমন করা এবং সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা।


ধর্মস্থির ও কণ্টকশোধনের মূল বৈশিষ্ট্য

১. ধর্মস্থির:

  1.  দেওয়ানি মামলা পরিচালনা করত।
  2.  সম্পত্তি, বিবাহ, উত্তরাধিকার, চুক্তি, ঋণ ইত্যাদি বিষয়ক বিরোধের মীমাংসা করত।
  3.  শাস্ত্র এবং প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিচার প্রদান করত।

২. কণ্টকশোধন:

  •  ফৌজদারি মামলা পরিচালনা করত।
  •   অপরাধমূলক কার্যকলাপ যেমন হত্যাকাণ্ড, চুরি, প্রতারণা ইত্যাদির বিচার করত।
  •   অপরাধ দমন এবং আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কঠোর ভূমিকা পালন করত।


এই দুটি আদালত মৌর্য সাম্রাজ্যের বিচার ব্যবস্থায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত। ধর্মস্থির এবং কণ্টকশোধন বিচারালয়গুলির মাধ্যমে সমাজে ন্যায়বিচার এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখা হত। যা সাম্রাজ্যের স্থিতিশীলতা ও শান্তি নিশ্চিত করত।

Post a Comment