Dog 🐶 2048 Brainstorming Game চরৈবেতি - বাংলা ব্লগ Kruti Dev to Unicode

কুষাণদের আদি পরিচয় ও ভারতে শাসন প্রতিষ্ঠা

কুষাণরা প্রাচীন ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাম্রাজ্য স্থাপনকারী একটি জাতি। তাদের আদি পরিচয় ও ভারতে শাসন প্রতিষ্ঠার ইতিহাস নানা উপাদানে সমৃদ্ধ। কুষাণরা ইউ চি জাতির একটি শাখা ছিল, যারা চীনের উত্তর পশ্চিম অংশে বসবাস করত। হুণদের আক্রমণে বিতাড়িত হয়ে এই শাখাটি সিরদরিয়া অঞ্চলে আশ্রয় নেয় এবং পাঁচটি ভাগে বিভক্ত হয়। পুনরায় হুণদের দ্বারা আক্রান্ত হলে কুষাণ নামে পরিচিত শাখাটি ভারতের উত্তর-পশ্চিমে প্রবেশ করে। ভারতে কুষাণ শাসনের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কুজুল কাদফিস, যিনি প্রথম কদফিস নামেও পরিচিত। তার নেতৃত্বে কুষাণ সাম্রাজ্য একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল রাজ্যে পরিণত হয়। এই প্রবন্ধে কুষাণদের আদি পরিচয়, তাদের ভারতে আগমন এবং শাসন প্রতিষ্ঠার ইতিহাস বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।

কুষাণদের আদি পরিচয় ও ভারতে শাসন প্রতিষ্ঠা

কুষাণদের আদি পরিচয়

ইউ চি জাতি ও কুষাণদের উৎপত্তি

১. চীনের উত্তর পশ্চিম অঞ্চল: ইউ চি জাতি প্রথমে চীনের উত্তর পশ্চিম অংশে বসবাস করতো। এই অঞ্চলে তাদের একটি শক্তিশালী এবং সুসংগঠিত সমাজ ছিল। 

২. হুণদের আক্রমণ: ইউ চি জাতি হুণদের আক্রমণের শিকার হয়েছিল। এই আক্রমণের ফলে তারা চীন থেকে বিতাড়িত হয়ে সিরদরিয়া অঞ্চলে বসবাস শুরু করে।

৩. পাঁচটি শাখায় বিভক্তি: সিরদরিয়া অঞ্চলে এসে ইউ চি জাতি পাঁচটি শাখায় বিভক্ত হয়ে যায়। এই শাখাগুলির মধ্যে একটি শাখা ছিল কুষাণ, যারা পরবর্তীতে ভারতে প্রবেশ করে এবং তাদের শাসন প্রতিষ্ঠা করে।


ভারতে কুষাণ শাসনের প্রতিষ্ঠাতা

১. কুজুল কাদফিস বা প্রথম কদফিস: ভারতে কুষাণ শাসনের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কুজুল কাদফিস, যাকে প্রথম কদফিস নামেও পরিচিত। তিনি ১৫-৬৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেছিলেন। 

২. ভারতে আগমন ও শাসন প্রতিষ্ঠা: কদফিস প্রথমে উত্তর-পশ্চিম ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল দখল করেন এবং একটি শক্তিশালী সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। তার শাসনামলে কুষাণ সাম্রাজ্য ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হয় এবং স্থিতিশীলতা অর্জন করে।


কদফিসের শাসনকালের গুরুত্ব

১. রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা: কদফিসের শাসনকালে কুষাণ সাম্রাজ্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা লাভ করে। তার নেতৃত্বে সাম্রাজ্যটির সীমানা বিস্তৃত হয় এবং বিভিন্ন অঞ্চলে কুষাণ শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।

২. সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রভাব: কদফিসের শাসনকালে বৌদ্ধধর্মের প্রসার ঘটে এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় বাড়ে। তার শাসনামলে বিভিন্ন স্থাপত্য, মুদ্রা এবং সাহিত্যিক কাজের মাধ্যমে কুষাণদের সংস্কৃতি ও ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে ওঠে।


কুষাণদের এই আদি পরিচয় এবং ভারতে তাদের শাসন প্রতিষ্ঠার ইতিহাস প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে পরিগণিত।

Tags:
Next Post Previous Post