নাসিক প্রশস্তি কে রচনা করেন?
নাসিক প্রশস্তি (Nasik Prashasti) ভারতের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন শিলালিপি যা সাতকর্ণীর মা গৌতমী বলশ্রী তার পুত্রের মৃত্যুর উনিশ বছর পরে উৎকীর্ণ (রচনা) করান। এই প্রশস্তি সাতকর্ণীর বীরত্ব, শাসনকালের কীর্তি এবং তার জীবনের বিভিন্ন দিকের বিশদ বিবরণ দেয়।
নাসিক প্রশস্তি এবং গৌতমী পুত্র সাতকর্ণীর
প্রশস্তির পটভূমি:
নাসিক প্রশস্তি উৎকীর্ণ করানোর পেছনে প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সাতকর্ণীর কীর্তি এবং যশ স্থায়ীভাবে লিপিবদ্ধ করা। গৌতমী বলশ্রী তার পুত্রের প্রতি গভীর ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য এই প্রশস্তি রচনা করেন। এটি একটি মাতৃ হৃদয়ের গভীর আবেগের প্রতিফলন, যা তার পুত্রের প্রতি অমর সন্মান প্রদর্শন করে।
সাতকর্ণীর বীরত্ব এবং শাসন:
সাতকর্ণী, সাতবাহন রাজবংশের একজন মহান শাসক ছিলেন। তার শাসনকালে, তিনি সাম্রাজ্যের বিস্তার, শৃঙ্খলা রক্ষা এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠায় বিশেষ কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন। প্রশস্তিতে তার বিভিন্ন যুদ্ধজয়ের বর্ণনা এবং শাসনকালের নানান গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
মাতৃ হৃদয়ের প্রদর্শন:
গৌতমী বলশ্রী তার পুত্রের শাসনকাল এবং ব্যক্তিগত গুণাবলীর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এই প্রশস্তি উৎকীর্ণ করান। এতে সাতকর্ণীর সুশাসন, প্রজাদের প্রতি দয়া এবং ন্যায়পরায়ণতার বর্ণনা রয়েছে। এটি শুধু একটি শাসকের প্রশংসা নয়, বরং একজন মায়ের হৃদয়ের গভীরতম অনুভূতির প্রকাশ।
ইতিহাসের মূল্য:
নাসিক প্রশস্তি শুধু সাতকর্ণীর জীবনের একটি নিদর্শন নয়, বরং সেই সময়ের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। এটি সাতবাহন সাম্রাজ্যের ইতিহাস এবং ভারতের প্রাচীন শাসনব্যবস্থা বোঝার জন্য একটি অমূল্য উৎস।
উপসংহার:
নাসিক প্রশস্তি গৌতমী বলশ্রীর মাতৃস্নেহের একটি অমর নিদর্শন। এটি সাতকর্ণীর জীবনের বিভিন্ন দিক এবং তার শাসনকালের কীর্তি সংরক্ষিত করেছে। গৌতমী বলশ্রীর এই উদ্যোগের ফলে সাতকর্ণীর যশ এবং কীর্তি চিরন্তন হয়ে উঠেছে, যা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে রয়ে গেছে।
Tags: #Ancient