সিন্ধু সভ্যতা: বৈশিষ্ট্য ও পতন (Features and decline of the Indus Valley Civilization)

"প্রাচীন ভারত"-এর অন্তর্গত "সিন্ধু উপত্যকা সভ্যতার বৈশিষ্ট্য এবং পতন" বিষয়ে বিস্তারিত নোটস।

সিন্ধু সভ্যতা, যা হরপ্পা সভ্যতা নামেও পরিচিত, ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীনতম এবং সর্ববৃহৎ ব্রোঞ্জযুগীয় (প্রায় ২৫০০-১৯০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে এর আবিষ্কার ভারতীয় ইতিহাসের কালক্রমকে সম্পূর্ণভাবে পাল্টে দেয়। এটি বিশ্বের চারটি প্রাচীনতম সভ্যতার (মেসোপটেমিয়া, মিশর, চীন) মধ্যে অন্যতম।

** হরপ্পা সভ্যতার বিভিন্ন কেন্দ্রের নাম, আবিষ্কারক, সাল, নদী (বর্তমানে নদীর নাম)

### ১. আবিষ্কার

* ১৯২১ খ্রিস্টাব্দ: দয়ারাম সাহানি কর্তৃক পাঞ্জাবের মন্টগোমারি জেলার (বর্তমানে পাকিস্তান) হরপ্পা আবিষ্কার।

* ১৯২২ খ্রিস্টাব্দ: রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় কর্তৃক সিন্ধু প্রদেশের লারকানা জেলার (বর্তমানে পাকিস্তান) মহেঞ্জোদারো আবিষ্কার।

* জন মার্শাল: প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের মহাপরিচালক হিসেবে এই আবিষ্কারগুলি তত্ত্বাবধান করেন এবং এই সভ্যতাকে "সিন্ধু সভ্যতা" নামে অভিহিত করেন।

* অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান: লোথাল (গুজরাট), কালিবঙ্গান (রাজস্থান), চানহুদারো (সিন্ধু), রূপার (পাঞ্জাব), বনওয়ালি (হরিয়ানা), ধোলাভিরা (গুজরাট), রাখিগড়ি (হরিয়ানা), সুরকোটাদা (গুজরাট) ইত্যাদি।


### ২. নামকরণ ও সময়কাল

* নামকরণ: প্রথম আবিষ্কৃত স্থান হরপ্পার নামে একে হরপ্পা সভ্যতা বলা হয়। এটি সিন্ধু নদী ও তার উপনদীগুলির অববাহিকায় গড়ে ওঠায় সিন্ধু উপত্যকা সভ্যতা নামেও পরিচিত। কিছু গবেষক সরস্বতী নদীর প্রাচীন গতিপথ বরাবরও অনেক প্রত্নক্ষেত্র পাওয়ায় এটিকে সিন্ধু-সরস্বতী সভ্যতা বলতে পছন্দ করেন।

* সময়কাল: কার্বন-১৪ ডেটিং পদ্ধতি অনুসারে, এই সভ্যতার পরিপক্ক পর্যায়টি ২৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ১৭৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এর পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী পর্যায়গুলিও ছিল, কিন্তু নগর পরিকল্পনা ও উন্নত জীবনযাত্রার প্রমাণ মূলত এই সময়কালেই পাওয়া যায়।


### ৩. ভৌগোলিক বিস্তার

* সিন্ধু সভ্যতা ছিল তার সমসাময়িক বিশ্বের বৃহত্তম সভ্যতা। এটি পশ্চিমে বেলুচিস্তানের সুতকাজেন্দর থেকে পূর্বে উত্তরপ্রদেশের আলমগীরপুর পর্যন্ত এবং উত্তরে জম্মু ও কাশ্মীর-এর মান্ডা থেকে দক্ষিণে মহারাষ্ট্রের দাইমাবাদ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।

* এটি ভারত, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের কিছু অংশ জুড়ে প্রায় ১৩ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত ছিল।


সিন্ধু সভ্যতা ২০০ টি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর


### ৪. সিন্ধু সভ্যতার বৈশিষ্ট্যসমূহ

ক. নগর পরিকল্পনা (Town Planning):

* পরিকল্পিত নগরী: সিন্ধু সভ্যতার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো এর উন্নত নগর পরিকল্পনা। প্রতিটি শহর দুটি প্রধান ভাগে বিভক্ত ছিল:

    * উঁচু দুর্গ/দুর্গাচীন (Citadel): এটি শহরের পশ্চিম দিকে উঁচু বেদীর ওপর নির্মিত হত। এখানে সম্ভবত শাসকশ্রেণী বা ধর্মীয় নেতারা বাস করতেন। মহেঞ্জোদারোর বৃহৎ স্নানাগার (Great Bath) এবং শস্যাগার (Granary) এর প্রধান উদাহরণ।

    * নিম্ন নগরী (Lower Town): এটি পূর্বে অবস্থিত ছিল এবং সাধারণ জনগণের আবাসস্থল ছিল।

* জ্যামিতিক বিন্যাস (Grid System): রাস্তাঘাটগুলি সোজা এবং প্রশস্ত ছিল, যা একে অপরের সাথে সমকোণে মিলিত হয়ে শহরকে বর্গাকার বা আয়তাকার ব্লকে বিভক্ত করত।

* পোড়ামাটির ইটের ব্যবহার: বাড়িঘর ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণে সুষম আকারের (সাধারণত ১:২:৪ অনুপাতে) পোড়ামাটির ইটের ব্যবহার হত।

* উন্নত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা (Advanced Drainage System): প্রতিটি বাড়ির বর্জ্য জল ঢাকা ড্রেন বা নর্দমার মাধ্যমে মূল ড্রেনের সাথে সংযুক্ত ছিল। ড্রেনগুলি ইট বা পাথর দিয়ে ঢাকা থাকত এবং নিয়মিত পরিষ্কার করার জন্য ম্যানহোল ছিল। এটি ছিল সমসাময়িক সভ্যতার তুলনায় অত্যন্ত উন্নত।

* বৃহৎ স্নানাগার (Great Bath): মহেঞ্জোদারোতে আবিষ্কৃত একটি বিশাল স্নানাগার, যা ধর্মীয় বা আনুষ্ঠানিক স্নানের জন্য ব্যবহৃত হত বলে মনে করা হয়। এর জল পরিবর্তনেরও সুব্যবস্থা ছিল।

* শস্যাগার (Granary): মহেঞ্জোদারো এবং হরপ্পায় বিশাল শস্যাগারের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, যা সম্ভবত অতিরিক্ত শস্য মজুত রাখার জন্য ব্যবহৃত হত।


খ. অর্থনৈতিক জীবন:

* কৃষি (Agriculture): সিন্ধু সভ্যতার মানুষের প্রধান জীবিকা ছিল কৃষি। তারা গম, যব, বার্লি, কলাই, মটর, তিল, সরিষা, এবং তুলার (বিশ্বে প্রথম) চাষ করত। লাঙলের ব্যবহার প্রচলিত ছিল (কালিবঙ্গানে লাঙল করা জমির নিদর্শন)।

* পশুপালন (Animal Husbandry): গরু, মহিষ, ভেড়া, ছাগল, শুকর, উট, কুকুর, বিড়াল ইত্যাদি পশুপালন করত। কিছু স্থানে ঘোড়ার নিদর্শন পাওয়া গেলেও তা বিতর্কিত। কুঁজোযুক্ত ষাঁড়ের বিশেষ গুরুত্ব ছিল।

* শিল্প ও কারুশিল্প (Industry & Crafts):

    * ধাতুশিল্প: ব্রোঞ্জ (তামা ও টিন মিশিয়ে), তামা, সোনা, রূপা, সীসা ইত্যাদি ধাতুর ব্যবহার জানত (তবে লোহার ব্যবহার অজানা ছিল)। ব্রোঞ্জের তৈরি নৃত্যরত নারীমূর্তি (Dancing Girl) মহেঞ্জোদারোর এক অসাধারণ নিদর্শন।

    * মৃৎশিল্প: লাল ও কালো রঙের চকচকে মৃৎপাত্র তৈরি করত, যা বিভিন্ন জ্যামিতিক নকশা এবং পশুপাখির চিত্রে সজ্জিত ছিল।

    * মূর্তি ও সীলমোহর: পোড়ামাটির পুতুল, পশুপাখির মূর্তি এবং অসংখ্য সীলমোহর (স্টিয়াটাইট পাথর দিয়ে তৈরি) পাওয়া গেছে। সীলমোহরগুলিতে বিভিন্ন পশুপাখি (একশৃঙ্গী জন্তু, কুঁজোযুক্ত ষাঁড়) এবং লিপির ব্যবহার দেখা যায়।

    * ওজন ও পরিমাপ: তাদের একটি সুসংগঠিত ওজন ও পরিমাপ ব্যবস্থা ছিল, যা সাধারণত ১৬-এর গুণিতকে (যেমন ১৬, ৬৪, ১৬০, ৩২০) পাথরের বা নিরেট বাটখারা (weights) দ্বারা নির্দেশিত হত।

* বানিজ্য (Trade):

    * অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য: ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের সাথে কাঁচামাল (যেমন রাজস্থানের ক্ষেত্রী থেকে তামা, দাক্ষিণাত্য থেকে সোনা, কর্ণাটক থেকে রূপা) আমদানি করত।

    * বৈদেশিক বাণিজ্য: মেসোপটেমিয়া (সুমের), পারস্য উপসাগরের দিলমুন ও মাকান-এর সাথে সমুদ্রপথে বাণিজ্য করত। লোথাল ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর নগরী। হরপ্পান সীলমোহর মেসোপটেমিয়ায় এবং মেসোপটেমীয় সীলমোহর সিন্ধু উপত্যকায় পাওয়া গেছে। মেসোপটেমীয় সূত্রে সিন্ধু সভ্যতাকে "মেলুহা" নামে উল্লেখ করা হয়েছে।


গ. সামাজিক জীবন:

* শ্রেণীবিভাগ: সমাজে সম্ভবত কয়েকটি শ্রেণী ছিল, যেমন- শাসক বা পুরোহিত শ্রেণী, বণিক ও কারিগর শ্রেণী, এবং শ্রমিক শ্রেণী।

* পোশাক ও অলঙ্কার: নারী-পুরুষ উভয়েই সুতির পোশাক পরিধান করত। ধনীরা সোনা, রূপা, হাতির দাঁত ও মূল্যবান পাথরের তৈরি অলঙ্কার ব্যবহার করত।

* খাদ্য: গম, যব, ফল, দুধ, মাংস (মাছ, মুরগি) তাদের প্রধান খাদ্য ছিল।

* বিনোদন: শিকার, মাছ ধরা, পাশা খেলা, নাচ ইত্যাদি তাদের বিনোদনের অংশ ছিল।


ঘ. ধর্মীয় বিশ্বাস:

* মাতৃদেবী পূজা: অসংখ্য পোড়ামাটির নারীমূর্তি পাওয়া গেছে, যা মাতৃদেবী পূজার ইঙ্গিত দেয়। উর্বরতা ও সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে এর পূজা প্রচলিত ছিল।

* পশুপতি মহাদেব (প্রোটো-শিব): মহেঞ্জোদারোর একটি সীলমোহরে তিনমুখো এক যোগী পুরুষকে বিভিন্ন পশুর (হাতি, বাঘ, গণ্ডার, মোষ) দ্বারা পরিবেষ্টিত অবস্থায় দেখা যায়, যাকে জন মার্শাল পশুপতি মহাদেব বা আদি শিব বলে অভিহিত করেছেন।

* বৃক্ষ ও পশুপুজা: পিপল গাছ এবং কুঁজোযুক্ত ষাঁড়ের পূজা প্রচলিত ছিল। কালিবঙ্গান ও লোথালে অগ্নিকুণ্ডের (Fire Altars) অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, যা সম্ভবত যজ্ঞ বা বলিদানের জন্য ব্যবহৃত হত।

* ধর্মীয় উপাসনালয়ের অভাব: অন্যান্য প্রাচীন সভ্যতার মতো সিন্ধু সভ্যতায় কোনো সুস্পষ্ট মন্দির বা উপাসনালয়ের নিদর্শন পাওয়া যায়নি।

* অন্ত্যেষ্টি সংস্কার: মৃতদেহ দাহ ও সমাধিস্থ উভয় প্রথাই প্রচলিত ছিল।


ঙ. শিল্পকলা ও স্থাপত্য:

* ভাস্কর্য: মহেঞ্জোদারোর ব্রোঞ্জের তৈরি "নৃত্যরত নারীমূর্তি" এবং পাথরের তৈরি "পুরোহিত রাজার" (Priest-King) মূর্তি সিন্ধু শিল্পকলার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন।

* মৃৎপাত্র: চিত্রিত মৃৎপাত্রগুলি শিল্পরুচির পরিচায়ক।

* সীলমোহর: সীলমোহরগুলিতে পশুপাখির বাস্তবসম্মত চিত্র এবং রহস্যময় লিপির খোদাই দেখতে পাওয়া যায়।


চ. লিপি ও পরিমাপ পদ্ধতি:

* লিপি: সিন্ধু লিপির এখনো পাঠোদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এটি ছিল চিত্রভিত্তিক (pictographic) এবং ডান থেকে বামে এবং কখনো কখনো বাম থেকে ডানে (Boustrophedon Style) লেখা হত। প্রায় ৪০০টি প্রতীক চিহ্নিত করা হয়েছে।

* পরিমাপ পদ্ধতি: তাদের ওজন ও পরিমাপ ব্যবস্থা অত্যন্ত সুনির্দিষ্ট ছিল, যা বাণিজ্যের জন্য অপরিহার্য ছিল।


ছ. রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা:

* সিন্ধু সভ্যতার রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে সুস্পষ্ট তথ্য নেই। কোনো রাজা বা সেনাবাহিনী-র সুস্পষ্ট প্রমাণ মেলেনি।

* কেউ কেউ মনে করেন, পুরোহিত বা বণিক শ্রেণী দ্বারা পরিচালিত একটি অলিগার্কি (oligarchy) বা অভিজাততান্ত্রিক শাসন প্রচলিত ছিল।

* নগর পরিকল্পনা ও শৃঙ্খলার কারণে একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষের অস্তিত্ব অনুমান করা হয়।


### ৫. সিন্ধু সভ্যতার পতন

১৯০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ নাগাদ সিন্ধু সভ্যতার পতন শুরু হয় এবং ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ নাগাদ এর সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্তি ঘটে। পতনের কারণ নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। পতন আকস্মিক না ধীরে ধীরে হয়েছিল, তা নিয়েও বিভিন্ন মতবাদ রয়েছে।


ক. আর্য আক্রমণ তত্ত্ব (Aryan Invasion Theory):

* প্রবক্তা: মর্টিমার হুইলার (Mortimer Wheeler), গর্ডন চাইল্ড (Gordon Childe)।

* যুক্তি: মহেঞ্জোদারোতে আবিষ্কৃত অসংখ্য কঙ্কাল, যা হঠাৎ সহিংস আক্রমণের শিকার বলে মনে হয়। ঋগ্বেদে আর্যদের দ্বারা "পুর" (দুর্গ) ধ্বংসের উল্লেখ। আর্যদের আগমন (প্রায় ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) এই পতনের সময়কালের সাথে মিলে যায়।

* খণ্ডন: অনেক গবেষক এই তত্ত্বকে দুর্বল বলে মনে করেন। কঙ্কালগুলি যে একই সময়ের, তার প্রমাণ নেই। ঋগ্বেদে উল্লিখিত "পুর" সিন্ধু নগরী কিনা তা নিশ্চিত নয়। তাছাড়া, সিন্ধু সভ্যতার পতন একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া ছিল, যা কোনো একক আক্রমণের দ্বারা ব্যাখ্যা করা কঠিন।


খ. জলবায়ুগত পরিবর্তন (Climatic Change):

* প্রবক্তা: অরেল স্টেইন (Aurel Stein), জি.এফ. ডেলস (G.F. Dales), ডি.পি. আগরওয়াল (D.P. Agrawal)।

* যুক্তি: এই অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী খরার কারণে বৃষ্টিপাত কমে যায়, নদীগুলো শুকিয়ে যায় (বিশেষ করে সরস্বতী নদী), এবং কৃষিকাজ ব্যাহত হয়। বন উজাড় এবং মরুকরণের ফলেও সভ্যতার পতন ঘটে।

* প্রমাণ: থর মরুভূমির বিস্তার, ঘগ্গর-হাকরা নদীর গতিপথ পরিবর্তন/শুকিয়ে যাওয়া।


গ. প্রাকৃতিক বন্যা (Natural Floods):

* প্রবক্তা: এম.এস. ভাটস (M.S. Vats), আর.এল. রাইকস (R.L. Raikes)।

* যুক্তি: সিন্ধু নদীর গতিপথ পরিবর্তনের ফলে মহেঞ্জোদারো ও অন্যান্য শহরগুলি বারবার ভয়াবহ বন্যার শিকার হয়। মহেঞ্জোদারোতে একাধিকবার ধ্বংসস্তূপের ওপর নতুন করে শহর গড়ে তোলার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

* সমালোচনা: বন্যা একটি নির্দিষ্ট এলাকার পতন ঘটাতে পারে, কিন্তু সমগ্র সভ্যতার পতন ব্যাখ্যা করে না।


ঘ. ভূমিকম্প ও নদীপথের পরিবর্তন (Earthquakes & River Course Changes):

* প্রবক্তা: আর.এল. রাইকস (R.L. Raikes), জি.এফ. ডেলস (G.F. Dales)।

* যুক্তি: ভূতাত্ত্বিক বিপর্যয় বা ভূমিকম্পের কারণে সিন্ধু এবং তার উপনদীগুলির গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে যায়, যার ফলে জলবায়ু পরিবর্তন হয় এবং কৃষিজমিতে জল সরবরাহ ব্যাহত হয়। নদীর গতিপথ পরিবর্তন কিছু শহরকে জলের উৎস থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়, আবার কিছু শহরকে বন্যার কবলে ফেলে।


ঙ. বহির্বাণিজ্যে পতন (Decline in External Trade):

* প্রবক্তা: স্টেয়ার্ট পিগট (Stuart Piggott), হুইলার।

* যুক্তি: মেসোপটেমিয়ার সাথে সিন্ধু সভ্যতার বাণিজ্যিক সম্পর্ক দুর্বল হয়ে পড়ে। বৈদেশিক বাণিজ্যের ওপর নির্ভরশীল এই সভ্যতার অর্থনীতিতে এর বড় প্রভাব পড়ে।


চ. প্রশাসনিক দুর্বলতা ও অভ্যন্তরীণ ক্ষয় (Administrative Weakness & Internal Decay):

* অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন, দীর্ঘ সময় ধরে সভ্যতার অতিরিক্ত জনসংখ্যা এবং সীমিত সম্পদের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়। সম্ভবত কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থায় দুর্বলতা দেখা দেয়, যা ক্রমবর্ধমান সমস্যাগুলি মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়।

* পরিবেশের ওপর মানুষের অতিরিক্ত চাপ (যেমন বন উজাড়) এবং সম্পদের অপচয়ও পতনের কারণ হতে পারে।


### উপসংহার

সিন্ধু সভ্যতার পতন সম্ভবত কোনো একটি একক কারণে ঘটেনি, বরং উপরোক্ত একাধিক কারণের সম্মিলিত প্রভাবে এটি ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়। নদীপথের পরিবর্তন, জলবায়ুগত সমস্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং সম্ভবত অভ্যন্তরীণ কাঠামোগত দুর্বলতা – এই সব কিছু মিলেই এই উন্নত নগর সভ্যতার অবসান ঘটায়। এর পতনের ফলে এক নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা থেকে গ্রামীণ জীবনে প্রত্যাবর্তন ঘটে, যা পরবর্তীকালে বৈদিক সভ্যতার উত্থানের পথ প্রশস্ত করে। সিন্ধু সভ্যতার লিপি এখনো পাঠোদ্ধার না হওয়ায় এর পতনের সম্পূর্ণ রহস্য উন্মোচন করা সম্ভব হয়নি।

FAQ Questions 100

1. সিন্ধু সভ্যতা কত খ্রিস্টপূর্বাব্দে বিকাশ লাভ করে?

আনুমানিক ২৫০০-১৯০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে।


2. সিন্ধু সভ্যতার প্রধান দুটি কেন্দ্র কি কি?

হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো।


3. সিন্ধু সভ্যতার নগর পরিকল্পনা কেমন ছিল?

সুবিন্যস্ত ও গ্রিড বিন্যাসের উপর ভিত্তি করে তৈরি।


4. মহেঞ্জোদারোর প্রধান বৈশিষ্ট্য কি ছিল?

বৃহৎ স্নানাগার ও শস্যভাণ্ডার।


5. সিন্ধু সভ্যতার বাড়ি তৈরিতে কোন উপকরণ ব্যবহৃত হত?

পোড়া ইট।


6. সিন্ধু সভ্যতার জল নিকাশী ব্যবস্থা কেমন ছিল?

উন্নত এবং ঢাকনাযুক্ত।


7. সিন্ধু সভ্যতার মানুষদের প্রধান পেশা কি ছিল?

কৃষি।


8. তারা কোন কোন ফসল উৎপাদন করত?

গম, যব, তুলা ইত্যাদি।


9. সিন্ধু সভ্যতার লিপি কেমন ছিল?

চিত্রলিপি, যা এখনো পাঠোদ্ধার করা যায়নি।


10. সিন্ধু সভ্যতায় কোন দেবীর পূজা প্রচলিত ছিল?

মাতৃদেবী।


11. পশুপতি শিবের সীল কোথায় পাওয়া গেছে?

মহেঞ্জোদারোতে।


12. সিন্ধু সভ্যতার লোকেরা কি লোহার ব্যবহার জানত?

না, তারা লোহার ব্যবহার জানত না।


13. সিন্ধু সভ্যতার অন্যতম বন্দর নগরী কোনটি?

লোথাল।


14. লোথাল কোন রাজ্যে অবস্থিত?

গুজরাট, ভারত।


15. সিন্ধু সভ্যতার সময়কালে বাণিজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র কোনটি ছিল?

মেসোপটেমিয়া।


16. সিন্ধু সভ্যতার মানুষদের প্রিয় খেলা কি ছিল?

পাশা খেলা।


17. সিন্ধু সভ্যতার পতনের একটি প্রধান কারণ কি?

জলবায়ু পরিবর্তন বা আর্য আক্রমণ (বিতর্কিত)।


18. কোন নদীর গতিপথ পরিবর্তন সিন্ধু সভ্যতার পতনে ভূমিকা রেখেছিল?

সরস্বতী নদী।


19. প্রত্নতাত্ত্বিক রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় কোন শহর আবিষ্কার করেন?

মহেঞ্জোদারো।


20. হরপ্পা শহরটি কে আবিষ্কার করেন?

দয়ারাম সাহানি।


21. সিন্ধু সভ্যতার সবচেয়ে বড় শস্যভাণ্ডার কোথায় পাওয়া গেছে?

হরপ্পায়।


22. সিন্ধু সভ্যতায় কোন প্রাণীর পূজা করা হত?

একশৃঙ্গী ষাঁড় ও ষাঁড়।


23. নৃত্যরতা ব্রোঞ্জের নর্তকীর মূর্তি কোথায় পাওয়া গেছে?

মহেঞ্জোদারোতে।


24. সিন্ধু সভ্যতার সমাজ ব্যবস্থা কেমন ছিল?

সম্ভবত মাতৃপ্রধান।


25. সিন্ধু সভ্যতার শিলমোহরগুলো কি দিয়ে তৈরি হতো?

স্টেটাইট (Soapstone) দিয়ে।


26. সিন্ধু সভ্যতায় কি হাতি পোষা হতো?

হ্যাঁ, তারা হাতির ব্যবহার জানত।


27. সিন্ধু সভ্যতার পতনের আর একটি কারণ কি হতে পারে?

ভূমিকম্প।


28. সিন্ধু সভ্যতার লোকেরা কি ধরনের বস্ত্র পরিধান করত?

তুলা ও পশমের বস্ত্র।


29. সিন্ধু সভ্যতার সময়কালকে কোন যুগের অংশ বলা হয়?

তাম্র-প্রস্তর যুগ (চ্যালকোলিথিক)।


30. সিন্ধু সভ্যতার বৃহত্তম ভারতীয় কেন্দ্র কোনটি?

রাখিগড়ি (হরিয়ানায়)।


31. সিন্ধু সভ্যতার দুর্গ এলাকার অপর নাম কি?

সিটাডেল।


32. সিন্ধু সভ্যতায় কি লোহার তৈরি কোন অস্ত্র পাওয়া গেছে?

না, কোন লোহার অস্ত্র পাওয়া যায়নি।


33. সিন্ধু সভ্যতার লোকেরা কি স্বর্ণ ও রৌপ্যের ব্যবহার জানত?

হ্যাঁ, জানত।


34. সিন্ধু সভ্যতার পতনে বন্যা কি ভূমিকা রেখেছিল?

হ্যাঁ, নদীর গতিপথ পরিবর্তন ও বন্যা একটি কারণ হিসেবে বিবেচিত।


35. সিন্ধু সভ্যতার একটি গুরুত্বপূর্ণ কৃষি ভিত্তিক গ্রাম কোনটি?

মেহেরগড়।


36. সিন্ধু সভ্যতার বাণিজ্য মূলত কিসের উপর নির্ভরশীল ছিল?

কৃষি ও হস্তশিল্পজাত পণ্যের উপর।


37. সিন্ধু সভ্যতার পতনের জন্য আর্য আক্রমণ তত্ত্বটি বর্তমানে কতটা গ্রহণযোগ্য?

এটি বর্তমানে ব্যাপকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ এবং বাতিল হয়েছে।


38. সিন্ধু সভ্যতার পতনে পরিবেশগত কারণ কি ছিল?

শুষ্ক আবহাওয়া এবং বন উজাড়।


39. হরপ্পা সভ্যতার লোকেরা কোন গাছের পূজা করত?

অশ্বত্থ গাছ।


40. সিন্ধু সভ্যতায় কবর দেওয়ার পদ্ধতি কেমন ছিল?

সাধারণত শবাধার বা মাটির পাত্রে মৃতদেহ রাখা হতো।


41. সিন্ধু সভ্যতার ঘরবাড়িগুলোর সাধারণ বৈশিষ্ট্য কি ছিল?

মাঝখানে উঠোন এবং চারপাশে কক্ষ।


42. সিন্ধু সভ্যতায় কি কোন মন্দির বা বৃহৎ ধর্মীয় কাঠামো আবিষ্কৃত হয়েছে?

না, নির্দিষ্ট কোন মন্দির আবিষ্কৃত হয়নি।


43. সিন্ধু সভ্যতার প্রধান শিল্পকলা কি ছিল?

মৃত্শিল্প, সীল ও টেরাকোটা মূর্তি।


44. সিন্ধু সভ্যতার পতনের পেছনে নদীর গতিপথ পরিবর্তনের উদাহরণ কোন শহর?

কালিবঙ্গান।


45. সিন্ধু সভ্যতার সময়কালে ব্যবহৃত দুটি ধাতুর নাম বলুন।

তামা ও ব্রোঞ্জ।


46. সিন্ধু সভ্যতার সীলমোহরগুলো কি উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতো?

বাণিজ্য ও ব্যক্তিগত পরিচয় জ্ঞাপনে।


47. সিন্ধু সভ্যতায় ব্যবহৃত ওজন ও পরিমাপের পদ্ধতি কেমন ছিল?

সুনির্দিষ্ট ও মানসম্মত।


48. সিন্ধু সভ্যতার পতনের পেছনে বিদেশি আক্রমণের অন্য কোন প্রমাণ আছে কি?

না, প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে এর কোন জোরালো প্রমাণ নেই।


49. সিন্ধু সভ্যতার শহরগুলোতে দুর্গের কি ভূমিকা ছিল?

সম্ভবত প্রশাসনিক ও প্রতিরক্ষামূলক কেন্দ্র হিসেবে।


50. সিন্ধু সভ্যতার পতনকে কি একটি একক ঘটনা বলা যায়?

না, এটি একাধিক কারণের সম্মিলিত ফল।


51. সিন্ধু সভ্যতার অন্য কি নাম আছে?

হরপ্পা সভ্যতা।


52. হরপ্পা নামটি কোথা থেকে এসেছে?

প্রথম আবিষ্কৃত শহর হরপ্পার নাম থেকে।


53. সিন্ধু সভ্যতার বিস্তার মূলত কোন দেশগুলিতে ছিল?

ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান।


54. সিন্ধু সভ্যতার কোন স্থান থেকে লাঙলের ফলা পাওয়া গেছে?

কালিবঙ্গান।


55. সিন্ধু সভ্যতার লোকেরা কোন ধরনের কৃষি পদ্ধতি ব্যবহার করত?

উন্নত সেচ ও একাধিক ফসল ফলানো।


56. সিন্ধু সভ্যতার স্থাপত্যে ইটের ব্যবহার কেমন ছিল?

পোড়া ইটের সুপরিকল্পিত ব্যবহার ছিল।


57. সিন্ধু সভ্যতার রাস্তাঘাট কেমন ছিল?

চওড়া, সরল ও একে অপরকে সমকোণে ছেদ করত।


58. সিন্ধু সভ্যতার প্রধান ধর্মীয় বিশ্বাস কি ছিল?

প্রকৃতি পূজা এবং উর্বরতা দেবীর আরাধনা।


59. সিন্ধু সভ্যতার শিল্পকর্মে ব্যবহৃত একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান কি ছিল?

পোড়ামাটি।


60. সিন্ধু সভ্যতার পতনে জলবায়ু পরিবর্তনের কি প্রভাব ছিল?

দীর্ঘস্থায়ী খরা এবং বৃষ্টিপাতের পরিবর্তন।


61. সিন্ধু সভ্যতার বণিকরা কোন দেশের সাথে বাণিজ্য করত?

মেসোপটেমিয়া।


62. সিন্ধু সভ্যতায় কোন ধরনের যানবাহনের ব্যবহার ছিল?

চাকাযুক্ত গরুর গাড়ি এবং নৌকা।


63. সিন্ধু সভ্যতার সিলমোহরগুলি কি তথ্য বহন করে?

বাণিজ্য, ধর্মীয় বিশ্বাস ও শিল্পকলার নিদর্শন।


64. সিন্ধু সভ্যতার পতনের ক্ষেত্রে ভূমিকম্পের কি ভূমিকা ছিল?

কিছু গবেষক ভূমিকম্পকে পতনের কারণ হিসেবে মনে করেন।


65. সিন্ধু সভ্যতার নগরগুলিতে কি শাসক শ্রেণি ছিল?

নির্দিষ্ট শাসক শ্রেণির অস্তিত্ব ছিল বলে অনুমান করা হয়।


66. সিন্ধু সভ্যতার অধিবাসীরা কোন ধরনের খেলাধুলায় অংশ নিত?

পাশা খেলা এবং ছোটখাটো দৌড় প্রতিযোগিতা।


67. সিন্ধু সভ্যতার প্রাপ্ত মৃৎশিল্পের প্রধান বৈশিষ্ট্য কি?

চকচকে লাল ও কালো রঙের নকশা।


68. সিন্ধু সভ্যতার অধিবাসীরা স্বাস্থ্য ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে কতটা সচেতন ছিল?

তারা অত্যন্ত সচেতন ছিল, যা তাদের জল নিকাশী ব্যবস্থায় প্রতিফলিত।


69. সিন্ধু সভ্যতার প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলি প্রথম কোথায় আবিষ্কৃত হয়?

হরপ্পা শহরে।


70. সিন্ধু সভ্যতার পরিমাপের জন্য কি ধরনের বাটখারা ব্যবহৃত হত?

ঘনক্ষেত্রাকার পাথরের বাটখারা।


71. সিন্ধু সভ্যতায় ঘোড়ার অস্তিত্ব ছিল কি?

প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ খুবই সীমিত।


72. সিন্ধু সভ্যতার পতনের জন্য কোন মহামারী দায়ী ছিল কি?

কিছু তত্ত্বে মহামারীও একটি সম্ভাব্য কারণ হিসেবে উল্লিখিত।


73. সিন্ধু সভ্যতার লিপির পাঠোদ্ধার করা কি সম্ভব হয়েছে?

এখনও হয়নি।


74. সিন্ধু সভ্যতায় প্রাপ্ত শীলমোহরে কি কোন পৌরাণিক প্রাণীর ছবি ছিল?

হ্যাঁ, একশৃঙ্গী প্রাণীর ছবি।


75. সিন্ধু সভ্যতার সময়কালে তৈরি গহনাগুলি কি দিয়ে তৈরি হত?

সোনা, রূপা, তামা ও মূল্যবান পাথর।


76. সিন্ধু সভ্যতার পতনে বাণিজ্য পথের পরিবর্তন কি ভূমিকা রেখেছিল?

বাণিজ্য পথের পরিবর্তন অর্থনৈতিক পতনে ভূমিকা রাখতে পারে।


77. সিন্ধু সভ্যতার শহরগুলির বিন্যাস কেমন ছিল?

গ্রিড প্যাটার্ন।


78. সিন্ধু সভ্যতায় শিশুদের জন্য কি ধরনের খেলনা পাওয়া গেছে?

মাটির তৈরি ছোট গাড়ি, পাখি ও পশুর মূর্তি।


79. সিন্ধু সভ্যতার পতনকে কি ধীরে ধীরে ঘটে যাওয়া প্রক্রিয়া হিসেবে দেখা হয়?

হ্যাঁ, এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া ছিল বলে মনে করা হয়।


80. সিন্ধু সভ্যতার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেমন ছিল?

নগরগুলো প্রাচীর দিয়ে ঘেরা ছিল।


81. সিন্ধু সভ্যতার মানুষদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় কি কি থাকত?

গম, বার্লি, ডাল, ফল ও মাছ।


82. সিন্ধু সভ্যতার সবচেয়ে পূর্বের স্থান কোনটি?

আলমগীরপুর।


83. সিন্ধু সভ্যতার সবচেয়ে পশ্চিমের স্থান কোনটি?

সুতকাগেন্দোর।


84. সিন্ধু সভ্যতার সবচেয়ে উত্তরের স্থান কোনটি?

মান্ডা।


85. সিন্ধু সভ্যতার সবচেয়ে দক্ষিণের স্থান কোনটি?

দাইমাবাদ।


86. সিন্ধু সভ্যতায় কিসের ব্যবহার কৃষিক্ষেত্রে বিপ্লব এনেছিল?

সেচ ব্যবস্থা।


87. সিন্ধু সভ্যতার কোন শহরটি তিনটি ভাগে বিভক্ত ছিল?

ধোলাভিরা।


88. সিন্ধু সভ্যতায় প্রাপ্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক বিল্ডিংয়ের নাম কি?

মহেঞ্জোদারোর বৃহৎ স্নানাগার।


89. সিন্ধু সভ্যতার সময়কালে কোন ধাতুগুলো বেশি ব্যবহৃত হত?

তামা ও ব্রোঞ্জ।


90. সিন্ধু সভ্যতায় পশুপালন কি ভূমিকা রাখত?

কৃষিকাজের পাশাপাশি পশুপালন একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ভিত্তি ছিল।


91. সিন্ধু সভ্যতার লিপিতে মোট কতগুলি চিহ্ন ছিল?

প্রায় ৪০০টি চিহ্ন।


92. সিন্ধু সভ্যতার লোকেরা মৃতদেহ কিভাবে সৎকার করত?

পূর্ণ সমাধি অথবা আংশিক দাহ।


93. সিন্ধু সভ্যতার পতনে জনঘনত্বের কি ভূমিকা থাকতে পারে?

অত্যধিক জনঘনত্ব প্রাকৃতিক সম্পদের উপর চাপ সৃষ্টি করেছিল।


94. সিন্ধু সভ্যতার সময়কালে বনাঞ্চলের কি অবস্থা ছিল?

কাঠ ব্যবহারের ফলে বনাঞ্চল কমে গিয়েছিল।


95. সিন্ধু সভ্যতায় কী ধরনের প্রশাসনিক কাঠামো ছিল?

কোন একক রাজা বা সম্রাট ছিল না বলে ধারণা করা হয়।


96. সিন্ধু সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ থেকে কি কোন অস্ত্রশস্ত্র পাওয়া গেছে?

হ্যাঁ, মূলত তামা ও ব্রোঞ্জের তৈরি অস্ত্র।


97. সিন্ধু সভ্যতার পতনে বহির্গামী অভিবাসন কি ভূমিকা রেখেছিল?

সম্পদের অভাব বা পরিবেশগত কারণে মানুষ অন্যত্র চলে যেতে পারে।


98. সিন্ধু সভ্যতায় কি কার্পাস তুলার চাষ হত?

হ্যাঁ, সিন্ধু সভ্যতার লোকেরা কার্পাস তুলার চাষ করত।


99. সিন্ধু সভ্যতার লোকেরা কি কাগজ ব্যবহার করত?

না, তারা কাগজ ব্যবহার করত না।


100. সিন্ধু সভ্যতার সময়কালে কি মৃৎপাত্রে চিত্রাঙ্কন করা হত?

হ্যাঁ, জ্যামিতিক নকশা ও প্রাণীচিত্রে সজ্জিত মৃৎপাত্র পাওয়া গেছে।