মহম্মদ বিন তুঘলকের কাজকর্মের মধ্যে কোন্ কোন্ দিক ঠিক ছিল বলে তুমি মনে করো?

★★★★★
সেইসময় ভারতে ডাকে চিঠিপত্র পাঠানোর দু-রকম ব্যবস্থা ছিল। ঘোড়ার ডাকের ব্যবস্থাকে ‘উলাক' বলা হত।

মহম্মদ বিন তুঘলকের কাজকর্মের মধ্যে কোন্ কোন্ দিক ঠিক ছিল বলে তুমি মনে করো?

মহম্মদ বিন তুঘলকের কাজকর্মের মধ্যে নিম্নলিখিত কাজগুলি ঠিক ছিল বলে আমি মনে করি :
  • (১) তাঁর আমলে যোগাযোগ ব্যবস্থার বিবরণ জানা যায় ইবন বতুতার বিবরণ থেকে। সেইসময় ভারতে ডাকে চিঠিপত্র পাঠানোর দু-রকম ব্যবস্থা ছিল। ঘোড়ার ডাকের ব্যবস্থাকে ‘উলাক' বলা হত। এই ব্যবস্থায় প্রতি চার মাইল অন্তর ডাকের ঘোড়া রাখা হত। পায়ে হাঁটা যে ডাকের ব্যবস্থা আছে, তাকে বলা হত ‘দাওয়া’। এই ব্যবস্থায় প্রত্যেক মাইলের এক-তৃতীয়াংশে ঘনবসতির একটি গ্রাম থাকে। দেশে নতুন লোকের আগমন সংবাদ গোয়েন্দা বিভাগের লোকেরা চিঠি লিখে সুলতানকে জানিয়ে দিত।
  • (২) সুলতান বাড়তি কর সংগ্রহের জন্য দোয়াব অঞ্চলে রাজস্ব বৃদ্ধি করেছিলেন। অনাবৃষ্টির ফলে সেখানে শস্যের প্রচুর ক্ষতি হয়েছিল। প্রজারা কর দিতে পারেনি। তরা বিদ্রোহ করে। তখন সুলতান বাড়তি কর মুকুব করেন। নষ্ট হওয়া ফসলের জন্য ক্ষতিপূরণ দেন তিনি। এমনকি কৃষকদের সাহায্য করার জন্য তিনি তকাভি ঋণদান প্রকল্প চালু করেছিলেন। 
  • (৩) সুলতান কয়েকজন অনভিজাত, সাধারণ ব্যক্তিকে প্রশাসনে উঁচু পদে বসিয়েছিলেন। তুর্কি অভিজাতদের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে রাখতে তিনি সাধারণ হিন্দুস্থানিদের ওপর নির্ভরতা দেখিয়েছিলেন। এদের মধ্যে একজন মদ তৈরি করতেন, একজন ছিলেন নাপিত, একজন ছিলেন পাচক ও দু-জন ছিলেন মালি।
  • (৪) সুলতান ধার্মিক ছিলেন বটে, কিন্তু ধর্মান্ধ ছিলেন না। তিনি উলেমা, মুর্তি প্রমুখের নির্দেশ না মেনে নিজের বুদ্ধি-বিবেচনা অনুযায়ী দেশের শাসনকাজ পরিচালনা করতেন। সেই যুগের সুলতানদের মধ্যে ব্যাভিচার, মদ্যাসক্তি, বিলাসব্যাসন থাকলেও মোহম্মদ বিন তুঘলকের মধ্যে এসব লক্ষ করা যায়নি।

Tags:
Next Post Previous Post

You May Also Like

Editor
ইতিহাস পাঠশালা

যা কিছু প্রাচীন, যা কিছু অতীত তাই হল ইতিহাস৷ ইতিহাস পাঠশালা হল ইতিহাসের সংক্ষিপ্ত, উত্তরধর্মী, প্রবন্ধ মূলক পাঠ সহায়ক একটি ব্লগ৷ মূলত ইতিহাস বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরাই এই ব্লগের প্রধান লক্ষ্য৷