লর্ড ওয়েলেসলির অধীনতামূলক মিত্রতা নীতির শর্ত কী ছিল? অধীনতামূলক মিত্রতা নীতির গুরুত্ব কী ছিল?

★★★★★
ঔপনিবেশিক ভারতে লর্ড ওয়েলেসলির অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি, এর শর্তাবলী এবং ব্রিটিশ সম্প্রসারণ গঠনে এর তাৎপর্য অন্বেষণ করুন।

১৭৯৮ খ্রিস্টাব্দে অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি প্রবর্তন করেন বাংলার তৎকালীন গভর্নর জেনারেল লর্ড ওয়েলেসলি। ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিস্তার ঘটানোর লক্ষ্যে তিনি এই নীতির শর্ত মেনে নেওয়ার জন্য দেশীয় রাজাদের উপর চাপ সৃষ্টি করেন এবং মানতে বাধ্য করেন।

অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি

অধীনতামূলক মিত্রতা নীতির শর্ত

অধীনতামূলক মিত্রতা নীতির শর্তগুলি ছিল-

  • ১। অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি গ্রহণকারী রাজ্যকে অভ্যন্তরীণ বিপদ থেকে এবং বৈদেশিক আক্রমণ থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি রক্ষা করবে।
  • ২। কোম্পানির বিনা অনুমতিতে মিত্রতায় আবদ্ধ দেশীয় রাজ্য অন্য কোনো শক্তির সঙ্গে যুদ্ধ বা বন্ধুত্ব করতে পারবে না।
  • ৩। অধীনতামূলক মিত্রতা গ্রহণকারী রাজ্যে একদল ইংরেজ সৈন্য ও একজন ইংরেজ প্রতিনিধি (রেসিডেন্ট) থাকবে।
  • ৪। রাজ্যে থাকা ইংরেজ সেনাবাহিনীর ব্যয়ভার মিত্রতা নীতি গ্রহণকারী রাজ্যকেই বহন করতে হবে।
  • ৫। রাজ্য থেকে ইংরেজ বাদে সব ইউরোপীয়দের বিতাড়িত করতে হবে।


অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি গ্রহণকারী রাজ্য

অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি প্রথম গ্রহণ করেছিল হায়দরাবাদ রাজ্যের শাসক নিজাম ১৭৯৮ খ্রি.। তারপর যথাক্রমে অযোধ্যা ১৮০১ খ্রি., পেশোয়া দ্বিতীয় বাজিরাও ১৮০২ খ্রি., ভোঁসলে ১৮০৩ খ্রি., সিন্ধিয়া ১৮০৩ খ্রি. প্রমুখ এই নীতি গ্রহণ করেন।


অধীনতামূলক মিত্রতা নাতি গুরুত্ব

অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি প্রয়োগের ফলে

  • ১। ইংরেজ কোম্পানির শক্তি ও সম্পদ বৃদ্ধি পায়।
  • ২। ইংরেজরা ব্যাবসাবাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারতে অপ্রতিদ্বন্দী শক্তিতে পরিণত হয়।
  • ৩। ইংরেজ সেনাবাহিনীর ব্যয়ভার মিত্রতা নীতি গ্রহণকারী রাজ্য বহন করায় ইংরেজদের সামরিক ক্ষেত্রে ব্যয় সংকুচিত হয়।
  • ৪। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সীমানা বৃদ্ধি পায়।


এইভাবে বিনা ব্যয়ে এবং বিনা রক্তপাতে ভারতের বিশাল অঞ্চল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত হয়।

Tags:
Next Post Previous Post

You May Also Like

Editor
ইতিহাস পাঠশালা

যা কিছু প্রাচীন, যা কিছু অতীত তাই হল ইতিহাস৷ ইতিহাস পাঠশালা হল ইতিহাসের সংক্ষিপ্ত, উত্তরধর্মী, প্রবন্ধ মূলক পাঠ সহায়ক একটি ব্লগ৷ মূলত ইতিহাস বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরাই এই ব্লগের প্রধান লক্ষ্য৷