প্রাচীন ভারতের শিল্পকলা কেবল পাথরের খোদাই বা চিত্রকর্ম নয়, এটি একটি সভ্যতার আত্মার প্রতিচ্ছবি। সহস্রাব্দ ধরে বিকশিত এই শিল্পকলা ভারতীয় সংস্কৃতি, ধর্মীয় বিশ্বাস, সামাজিক জীবন এবং দার্শনিক চিন্তাভাবনার গভীর পরিচয় বহন করে। খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাব্দ থেকে শুরু করে মধ্যযুগ পর্যন্ত বিস্তৃত এই শিল্পকলা স্থাপত্য, ভাস্কর্য, চিত্রশিল্প এবং কারুশিল্পের বৈচিত্র্যপূর্ণ রূপ নিয়ে গঠিত। এই নিবন্ধে প্রাচীন ভারতের শিল্পকলার বিভিন্ন পর্যায়, তার বৈশিষ্ট্য এবং উল্লেখযোগ্য উদাহরণগুলো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে, যা এর সমৃদ্ধি ও গভীরতা বুঝতে সাহায্য করবে।
১. হরপ্পা সভ্যতার শিল্পকলা (আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০-১৯০০ অব্দ)
প্রাচীন ভারতের শিল্পকলার সূচনা হয় সিন্ধু নদের তীরে গড়ে ওঠা হরপ্পা বা সিন্ধু সভ্যতার মধ্য দিয়ে। এই সময়ের শিল্পকলা প্রধানত নাগরিক পরিকল্পনা, ব্যবহারিক সামগ্রী এবং ধর্মীয় প্রতীকবাদের ওপর গুরুত্ব দেয়।
* প্রধান বৈশিষ্ট্য:
- শহুরে পরিকল্পনা: হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারোর সুপরিকল্পিত নগরী, পোড়া ইটের ব্যবহার, উন্নত নিষ্কাশন ব্যবস্থা এই সভ্যতার স্থাপত্য দক্ষতার প্রমাণ।
- সীলমোহর (Seals): অসংখ্য সীলমোহর আবিষ্কৃত হয়েছে, যা মূলত স্টিয়েটাইট পাথরের তৈরি। এগুলিতে বিভিন্ন প্রাণী (যেমন: একশৃঙ্গ গণ্ডার, হাতি, বাঘ), ধর্মীয় প্রতীক এবং চিত্রলিপির ব্যবহার দেখা যায়। পশুপতি শিবের সীলমোহর বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
* ভাস্কর্য:
- পোড়ামাটির মূর্তি (Terracotta Figurines): অসংখ্য দেবদেবীর মূর্তি, মাতৃমূর্তি, পুতুল এবং প্রাণীর ছোট ছোট মূর্তি পাওয়া গেছে। এগুলি প্রধানত ধর্মীয় ও খেলার সামগ্রী হিসেবে ব্যবহৃত হত।
- ধাতব ভাস্কর্য: মহেঞ্জোদারো থেকে প্রাপ্ত ব্রোঞ্জের তৈরি 'নর্তকী' মূর্তিটি (Dancing Girl) এই সময়ের ধাতব ঢালাই শিল্পের এক অসাধারণ উদাহরণ। এটি ভারতীয় ভাস্কর্যের ইতিহাসের প্রথম দিকের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন।
- পাথরের ভাস্কর্য: মহেঞ্জোদারো থেকে পাওয়া 'পুরোহিত-রাজার' (Priest-King) আবক্ষ মূর্তিটি এই সময়ের পাথরের কাজে সূক্ষ্মতার প্রমাণ দেয়।
- মৃৎশিল্প (Pottery): মসৃণ, চকচকে লাল ও কালো মাটির পাত্রে জ্যামিতিক নকশা এবং কিছু ক্ষেত্রে প্রাণীর ছবি দেখা যায়।
২. বৈদিক যুগ ও প্রারম্ভিক বৌদ্ধ শিল্পকলা (আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ - খ্রিস্টপূর্ব ২০০ অব্দ)
বৈদিক যুগে (খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০-৬০০ অব্দ) শিল্পকলার তেমন কোনো ভৌত নিদর্শন পাওয়া যায় না, কারণ এই সময় মুখে মুখে জ্ঞান ও ধর্মীয় স্তোত্র প্রচারিত হত। এরপর মৌর্য যুগ থেকে (খ্রিস্টপূর্ব ৩২২-১৮৫ অব্দ) শিল্পকলায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়, যা প্রধানত বৌদ্ধ ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতায় বিকশিত হয়েছিল।
* মৌর্য যুগের শিল্পকলা:
- রাজকীয় পৃষ্ঠপোষকতা: সম্রাট অশোকের (খ্রিস্টপূর্ব ২৭৩-২৩২ অব্দ) সময় শিল্পকলা রাজকীয় পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করে।
- স্তম্ভ (Pillars): অশোকের পাথরের স্তম্ভগুলি অত্যন্ত মসৃণ ও পালিশ করা, যা তৎকালীন প্রস্তরশিল্পের চরম উৎকর্ষের প্রমাণ। এগুলির শীর্ষে সিংহ, ষাঁড় বা অন্যান্য প্রাণীর সুন্দর খোদাই করা মূর্তি দেখা যায়, যার মধ্যে সারনাথের সিংহচতুর্মুখ স্তম্ভশীর্ষটি ভারতের জাতীয় প্রতীক হিসেবে গৃহীত।
- স্তূপ (Stupas): বুদ্ধের দেহাবশেষের উপর নির্মিত অর্ধগোলাকার স্তূপগুলি ছিল প্রথম দিকের বৌদ্ধ স্থাপত্যের গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন। সাঁচির মহাস্তূপ (মূল অংশ) এই সময়ের।
- গুহা স্থাপত্য (Rock-cut Architecture): বিহারের বারাবার গুহাগুলি (যেমন: লোমশ ঋষি গুহা) মৌর্য যুগের শিলা কেটে তৈরি স্থাপত্যের অন্যতম প্রাচীন উদাহরণ।
- শুঙ্গ, সাতবাহন ও কুষাণ পূর্ববর্তী শিল্পকলা (খ্রিস্টপূর্ব ২০০ - খ্রিস্টীয় ২০০ অব্দ):
- সাঁচি ও ভরহুত: স্তূপগুলির বেষ্টনী (বেদিকা) ও তোরণগুলিতে (তোরানা) বুদ্ধের জীবনের ঘটনা, জাতক কাহিনী এবং লোকজীবনের দৃশ্য অত্যন্ত বিস্তারিতভাবে খোদাই করা হয়েছে। এখানে বুদ্ধকে প্রতীকী রূপে (যেমন: বোধিবৃক্ষ, ধর্মচক্র) দেখানো হয়েছে, মানব রূপে নয়।
- কার্লে গুহা (Karle Caves): খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতকে নির্মিত কার্লের চৈত্য (উপাসনালয়) ও বিহার (আবাসস্থল) গুহাগুলি তৎকালীন শিলা-কাটা স্থাপত্যের এক অপূর্ব নিদর্শন। এর বিশাল প্রবেশপথ ও কাঠের মতো দেখতে পাথরের খোদাই উল্লেখযোগ্য।
৩. কুষাণ যুগের শিল্পকলা ও বুদ্ধের মূর্তি (আনুমানিক খ্রিস্টীয় ৫০ - ৩০০ অব্দ)
কুষাণ যুগে (বিশেষ করে রাজা কনিষ্কের সময়ে) শিল্পকলায় এক বিপ্লবী পরিবর্তন আসে – বুদ্ধের মানব রূপী মূর্তি তৈরি শুরু হয়। এই সময় দুটি প্রধান শিল্পশৈলী বিকশিত হয়:
- গান্ধার শিল্পকলা (Gandhara School):
- অবস্থান: উত্তর-পশ্চিম ভারত (বর্তমান পাকিস্তান ও আফগানিস্তান)।
- প্রভাব: গ্রিক-রোমান শিল্পের সুস্পষ্ট প্রভাব দেখা যায়।
* বৈশিষ্ট্য:
- বুদ্ধের মুখমণ্ডল গ্রিক দেবদেবীর মতো সুন্দর ও সুঠাম।
- পোশাকে তরঙ্গায়িত ভাঁজ (drapery) দেখা যায়, যা গ্রিক ভাস্কর্যের অনুরূপ।
- চুলে কোঁকড়ানো ঢেউ এবং মাথার পেছনে জ্যোতির্বলয় দেখা যায়।
- পাথর হিসেবে মূলত ধূসর ও নীল-ধূসর রঙের শিষ্ট শিলা (schist) ব্যবহার করা হত।
- বাস্তবসম্মত মানবদেহের গঠনকে গুরুত্ব দেওয়া হত।
- মথুরা শিল্পকলা (Mathura School):
- অবস্থান: উত্তর ভারতের মথুরা অঞ্চল।
- প্রভাব: সম্পূর্ণরূপে ভারতীয় ঐতিহ্য ও শৈলীর উপর নির্ভরশীল।
* বৈশিষ্ট্য:
- বুদ্ধের মুখমণ্ডল গোলাকার, বলিষ্ঠ এবং আধ্যাত্মিক দ্যুতিময়।
- পোশাকে শরীরের গড়ন স্পষ্ট বোঝা যায় (পাতলা কাপড়)।
- চুল ছোট ও কুঁকড়ে থাকে (snail shell curls)।
- লালচে বেলেপাথর (red sandstone) ব্যবহার করা হত।
- আধ্যাত্মিক ও ভাবগম্ভীর অভিব্যক্তিকে গুরুত্ব দেওয়া হত, বাস্তবতার চেয়ে।
৪. গুপ্ত যুগের শিল্পকলা: ভারতীয় শিল্পের স্বর্ণযুগ (আনুমানিক খ্রিস্টীয় ৩০০ - ৬০০ অব্দ)
গুপ্ত যুগকে ভারতীয় শিল্পের 'স্বর্ণযুগ' বলা হয়। এই সময়ে শিল্পকলা এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছায়, যেখানে সৌন্দর্য, সামঞ্জস্য, সূক্ষ্মতা এবং আধ্যাত্মিকতার এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটে।
* প্রধান বৈশিষ্ট্য:
- ক্লাসিক্যাল আদর্শ: ভাস্কর্যে এক নতুন "ক্লাসিক্যাল" আদর্শ তৈরি হয়, যেখানে মানবদেহকে ত্রুটিমুক্ত, মসৃণ এবং আদর্শায়িত রূপে ফুটিয়ে তোলা হয়।
- আধ্যাত্মিক অভিব্যক্তি: মূর্তিগুলিতে এক শান্ত, সৌম্য এবং আত্মমগ্ন অভিব্যক্তি দেখা যায়, যা গভীর আধ্যাত্মিক শান্তির প্রতীক।
* ভাস্কর্য:
- সারনাথের বুদ্ধ মূর্তি: এটি গুপ্ত ভাস্কর্যের শ্রেষ্ঠ নিদর্শনগুলির একটি। শান্ত মুখমণ্ডল, পরিশীলিত দেহভঙ্গি এবং দেহের মাধ্যমে পরিহিত পোশাকের স্বচ্ছতা এই মূর্তির প্রধান বৈশিষ্ট্য।
- দেওগড়ের দশাবতার মন্দিরের ভাস্কর্য: বিষ্ণুর বিভিন্ন অবতারের চিত্রণ এবং মন্দিরের বাইরের দেয়ালে খোদিত বিভিন্ন দেব-দেবী ও পৌরাণিক কাহিনী এই সময়ের ভাস্কর্য শিল্পের অপূর্ব উদাহরণ।
- চিত্রশিল্প (Painting):
- অজন্তা গুহা (Ajanta Caves): মহারাষ্ট্রের অজন্তায় শিলা কেটে তৈরি গুহাগুলিতে খ্রিস্টীয় ২য় থেকে ৭ম শতকের মধ্যে আঁকা অপূর্ব ফ্রেস্কো ও ম্যুরাল চিত্রগুলি গুপ্ত যুগের চিত্রকলার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ। এগুলিতে বুদ্ধের জীবনের ঘটনা, জাতক কাহিনীর দৃশ্য, দেব-দেবী এবং রাজকীয় জীবনের চিত্রায়ণ করা হয়েছে।
- বাঘ গুহা (Bagh Caves): মধ্যপ্রদেশের বাঘ গুহাগুলিতেও অজন্তার মতোই উচ্চমানের চিত্রশিল্প দেখা যায়।
- স্থাপত্য (Architecture):
- স্বতন্ত্র মন্দির (Free-standing Temples): গুপ্ত যুগে শিলা কেটে তৈরি গুহা মন্দিরের পাশাপাশি ইঁট ও পাথর দিয়ে তৈরি স্বতন্ত্র মন্দিরের বিকাশ ঘটে। দেওগড়ের দশাবতার মন্দির, ভিতরগাঁওয়ের ইঁটের তৈরি মন্দির এবং সাঁচির ১৭ নম্বর মন্দির এর উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।
- শিলা-কাটা স্থাপত্য: অজন্তা, ইলোরা (প্রাথমিক পর্যায়) এবং এলিফ্যান্টার কিছু গুহা মন্দির এই সময়ের স্থাপত্য শৈলী বহন করে।
৫. আঞ্চলিক বিকাশ ও মন্দিরের স্থাপত্য (আনুমানিক খ্রিস্টীয় ৬০০ - ১২০০ অব্দ)
গুপ্ত যুগের পর ভারতীয় শিল্পকলা আঞ্চলিক ধারায় বিকশিত হতে শুরু করে। মন্দির স্থাপত্য এই সময়ের শিল্পকলার প্রধানতম দিক হয়ে ওঠে।
- ইলোরা ও এলিফ্যান্টা গুহা (Ellora & Elephanta Caves):
- মহারাষ্ট্রের ইলোরা গুহাগুলিতে বৌদ্ধ, হিন্দু এবং জৈন ধর্মের শিলা-কাটা মন্দির ও মঠের সমাহার দেখা যায়, যা খ্রিস্টীয় ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শতকের মধ্যে নির্মিত। এখানকার সবচেয়ে বিখ্যাত নিদর্শন হল কৈলাস মন্দির, যা একটি বিশাল পাথরকে উপর থেকে নিচে কেটে একটি সম্পূর্ণ মন্দির কমপ্লেক্সে রূপান্তরিত করা হয়েছে।
- এলিফ্যান্টা গুহার মহেশ্বর ত্রিমূর্তি (সদাশিব) ভাস্কর্যটি হিন্দু শিল্পের এক অসাধারণ উদাহরণ।
- উত্তর ভারতীয় মন্দির স্থাপত্য (নাগারা শৈলী):
- প্রধান বৈশিষ্ট্য: শিখর (curvilinear tower), গর্ভগৃহের উপর চূড়া, বিভিন্ন উপ-শিখর, মণ্ডপ (prayer hall)।
- উদাহরণ: খাজুরাহোর কান্ডারিয়া মহাদেব মন্দির, ভুবনেশ্বরের লিঙ্গরাজ মন্দির, কোনার্কের সূর্য মন্দির।
- দক্ষিণ ভারতীয় মন্দির স্থাপত্য (দ্রাবিড় শৈলী):
- প্রধান বৈশিষ্ট্য: পিরামিড আকারের বিমান (tower), বিশাল প্রবেশদ্বার (গোপুরম), মণ্ডপ, জলপথ (বা পুকুর)।
- উদাহরণ: মহাবলীপুরমের রথ মন্দির, কাঞ্চিপুরমের কৈলাসনাথ মন্দির, তাঞ্জোরের বৃহদীশ্বর মন্দির।
প্রাচীন ভারতীয় শিল্পের সাধারণ বৈশিষ্ট্য ও থিম
প্রাচীন ভারতীয় শিল্পকলার কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা এটিকে বিশ্ব শিল্পকলা থেকে স্বতন্ত্র করেছে:
- ধর্মীয় প্রভাব: ভারতীয় শিল্পের প্রায় পুরোটাই ধর্মীয় বিশ্বাস (বৌদ্ধধর্ম, হিন্দুধর্ম, জৈনধর্ম) দ্বারা অনুপ্রাণিত। এর উদ্দেশ্য ছিল মোক্ষ বা আধ্যাত্মিক মুক্তি লাভ।
- প্রতীকবাদ: শিল্পকর্মগুলিতে গভীর প্রতীকী অর্থ লুকিয়ে থাকে। প্রতিটি অঙ্গভঙ্গি, মুদ্রা, এমনকি ব্যবহৃত রং ও প্রাণী এক বিশেষ অর্থ বহন করে।
- আদর্শবাদ: বাস্তবতার চেয়ে একটি আদর্শিক রূপকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। মানবদেহকে আদর্শিক সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে দেখানো হয়েছে, যা দৈহিক ত্রুটিমুক্ত।
- প্রকৃতির প্রভাব: প্রকৃতি (যেমন: লতা, পাতা, ফুল, প্রাণী) শিল্পের অবিচ্ছেদ্য অংশ। গাছপালা ও প্রাণীরা প্রায়শই মানব বা দেব-দেবী মূর্তির সাথে মিশে যায়।
- বর্ণনাত্মক শিল্প: অনেক শিল্পকর্মই গল্প বা কাহিনী (যেমন: জাতক কাহিনী, পৌরাণিক উপাখ্যান) বর্ণনা করে।
- শিল্পীর পরিচয়হীনতা: বেশিরভাগ প্রাচীন ভারতীয় শিল্পকর্মই শিল্পীর নাম বহন করে না, কারণ সৃষ্টিকে একটি আধ্যাত্মিক প্রক্রিয়া হিসেবে দেখা হত।
- সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিফলন: শিল্পকলা তৎকালীন সমাজ, পোশাক, গহনা, জীবনযাপন ও সাংস্কৃতিক রীতিনীতির চিত্র তুলে ধরে।
উপসংহার
প্রাচীন ভারতের শিল্পকলা কেবল তার নান্দনিক সৌন্দর্যের জন্যই নয়, এর ঐতিহাসিক, ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক তাৎপর্যের জন্যও বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত। হরপ্পা সভ্যতার সুপরিকল্পিত নগরী থেকে শুরু করে মৌর্য যুগের রাজকীয় স্তম্ভ, কুষাণ যুগের বুদ্ধ মূর্তি, গুপ্ত যুগের ক্লাসিক্যাল ভাস্কর্য ও চিত্রশিল্প এবং মধ্যযুগীয় মন্দিরের জটিল স্থাপত্য - প্রতিটি ধাপই ভারতীয় শিল্পকলার ধারাবাহিক বিকাশ ও গভীরতাকে নির্দেশ করে। এই শিল্পকলা শুধু অতীতের গৌরব নয়, এটি বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য এক অফুরন্ত অনুপ্রেরণার উৎস, যা ভারতীয় সভ্যতার মৌলিক মূল্যবোধ ও আধ্যাত্মিক অনুসন্ধানকে সজীব রেখেছে।