১৯শ শতকে ইউরোপে ফরাসি বিপ্লব ও নেপোলিয়নের সাম্রাজ্য বিস্তারের প্রভাবে জাতীয়তাবাদের ধারণা গভীরভাবে প্রোথিত হয়। জাতি-রাষ্ট্র (Nation-State) গঠনের এই প্রক্রিয়া ইউরোপের রাজনৈতিক মানচিত্রকে সম্পূর্ণ বদলে দেয়। এই সময়ে ইতালি ও জার্মানির ঐক্যসাধন ছিল জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি ঘটনা। এই ঐক্য প্রক্রিয়ায় দেশপ্রেম, সামরিক শক্তি, কূটনীতি এবং দূরদর্শী নেতৃত্বের এক অনন্য সংমিশ্রণ দেখা যায়।
### ১. ইতালির ঐক্যসাধন (Unification of Italy)
পটভূমি:
১৮১৫ সালের ভিয়েনা কংগ্রেসের সিদ্ধান্তের ফলে ইতালি রাজনৈতিকভাবে ৭টি প্রধান রাজ্যে বিভক্ত ছিল:
* সার্ডিনিয়া-পিয়েডমন্ট: একমাত্র স্বাধীন ইতালীয় রাজ্য, যার নেতৃত্বে ছিলেন রাজা দ্বিতীয় ভিক্টর ইমানুয়েল।
* লম্বার্ডি-ভেনেশিয়া: অস্ট্রিয়ার প্রত্যক্ষ শাসনাধীন।
* পারমা, মোডেনা, টাস্কানি: হ্যাবসবার্গ বংশ দ্বারা শাসিত।
* পোপের রাজ্যসমূহ: পোপের দ্বারা শাসিত।
* নেপলস ও সিসিলি: বুরবোঁ রাজবংশ দ্বারা শাসিত।
অস্ট্রিয়ান প্রধানমন্ত্রী মেটারনিখ ইতালিকে "একটি ভৌগোলিক অভিব্যক্তি" (A geographical expression) বলে অভিহিত করে তার বিচ্ছিন্নতাবাদী চরিত্রকে বোঝাতে চেয়েছিলেন। ইতালির ঐক্যকে "রিসরজিমেন্টো" (Risorgimento) বা পুনরুত্থান আন্দোলন বলা হয়।
ঐক্যের প্রধান স্থপতিগণ:
1. জুসেপ্পে ম্যাজিনি (Giuseppe Mazzini):
* উপাধি: 'ইতালির আত্মার প্রতীক' (Soul of Italy)।
* আদর্শ: গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা।
* সংগঠন:
* ১৮৩১ সালে "তরুণ ইতালি" (Young Italy) নামক গুপ্ত সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন। এর স্লোগান ছিল "ঈশ্বর ও জনগণ" (God and the People)।
* পরবর্তীতে "তরুণ ইউরোপ" (Young Europe) গঠন করেন।
* ভূমিকা: তার বিপ্লবী আদর্শ তরুণদের প্রভাবিত করেছিল এবং জাতীয়তাবাদী চেতনার জন্ম দিয়েছিল। ১৮৪৮ সালের বিপ্লবের সময় তিনি রোমে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করলেও তা ব্যর্থ হয়।
2. কাউন্ট ক্যাভুর (Count Cavour):
* উপাধি: 'ইতালির মস্তিষ্কের প্রতীক' (Brain of Italy)।
* ভূমিকা: সার্ডিনিয়া-পিয়েডমন্টের প্রধানমন্ত্রী (১৮৫২ খ্রিস্টাব্দ থেকে)। তিনি সামরিক শক্তি ও কূটনীতির মাধ্যমে ইতালির ঐক্য সাধনের পক্ষপাতী ছিলেন (Realpolitik)।
* নীতি:
* রাজ্যটিকে অর্থনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে শক্তিশালী করেন।
* ১৮৫৪-৫৬ সালের ক্রিমিয়ার যুদ্ধে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের পক্ষে যোগ দিয়ে ইতালির সমস্যাকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরেন।
* ১৮৫৮ সালে ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়নের সাথে প্লোমবিয়ের্স চুক্তি (Plombières Agreement) স্বাক্ষর করেন। এর মাধ্যমে অস্ট্রিয়াকে পরাজিত করতে ফ্রান্সের সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি লাভ করেন।
3. জুসেপ্পে গ্যারিবল্ডি (Giuseppe Garibaldi):
* উপাধি: 'ইতালির তরবারির প্রতীক' (Sword of Italy)।
* ভূমিকা: একজন দুর্ধর্ষ বিপ্লবী ও সৈনিক। তার অনুগামীরা "লালকুত্তা" (Red Shirts) নামে পরিচিত ছিল।
* অভিযান: ১৮৬০ সালে "এক হাজার" (The Expedition of the Thousand) অনুগামী নিয়ে সিসিলি ও নেপলস জয় করেন।
* ত্যাগ: ব্যক্তিগত উচ্চাকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করে বিজিত রাজ্যগুলি সার্ডিনিয়া-পিয়েডমন্টের রাজা দ্বিতীয় ভিক্টর ইমানুয়েলের হাতে তুলে দেন, যা ঐক্যের পথ সুগম করে।
4. দ্বিতীয় ভিক্টর ইমানুয়েল (Victor Emmanuel II):
* সার্ডিনিয়া-পিয়েডমন্টের রাজা এবং পরবর্তীতে ঐক্যবদ্ধ ইতালির প্রথম রাজা। তার নেতৃত্বে ও ক্যাভুরের কূটনীতিতে ইতালির ঐক্য সম্পন্ন হয়।
ঐক্যের পর্যায়ক্রমিক ঘটনা:
* ১ম পর্যায়: ফরাসি সহায়তা ও লম্বার্ডি জয় (১৮৫৯):
* কাউন্ট ক্যাভুরের উদ্যোগে ফ্রান্সের সঙ্গে জোট বেঁধে সার্ডিনিয়া-পিয়েডমন্ট অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
* মাজেন্টা (Magenta) ও সলফেরিনো (Solferino) এর যুদ্ধে অস্ট্রিয়া পরাজিত হয়।
* ভিলাফ্রাঙ্কা চুক্তি (Treaty of Villafranca) অনুসারে, অস্ট্রিয়া লম্বার্ডি ছেড়ে দেয় কিন্তু ভেনেশিয়া তাদের দখলেই থাকে। সার্ডিনিয়া-পিয়েডমন্ট ফ্রান্সকে সেভয় ও নিস (Savoy and Nice) প্রদান করে।
* ২য় পর্যায়: মধ্য ও দক্ষিণ ইতালির সংযুক্তি (১৮৬০):
* মধ্য ইতালির পারমা, মোডেনা, টাস্কানি ও পোপের রাজ্যের কিছু অংশ গণভোটের মাধ্যমে সার্ডিনিয়া-পিয়েডমন্টের সঙ্গে যুক্ত হয়।
* জুসেপ্পে গ্যারিবল্ডি তার লালকুত্তা বাহিনী নিয়ে সিসিলি ও নেপলস দখল করে তা দ্বিতীয় ভিক্টর ইমানুয়েলের হাতে তুলে দেন।
* ৩য় পর্যায়: ইতালির ঐক্য ঘোষণা (১৮৬১):
* ১৮৬১ সালের ১৭ই মার্চ ভেনেশিয়া ও রোম ব্যতীত প্রায় সমগ্র ইতালিকে একত্রিত করে দ্বিতীয় ভিক্টর ইমানুয়েল ঐক্যবদ্ধ ইতালির রাজা হিসেবে ঘোষিত হন। ফ্লোরেন্স সাময়িকভাবে রাজধানী হয়।
* ৪র্থ পর্যায়: ভেনেশিয়ার সংযুক্তি (১৮৬৬):
* ১৮৬৬ সালে অস্ট্রিয়া-প্রাশিয়া যুদ্ধে ইতালি প্রাশিয়ার পক্ষে যোগ দেয়। অস্ট্রিয়ার পরাজয়ের পর ভেনেশিয়া ইতালির অন্তর্ভুক্ত হয়।
* ৫ম পর্যায়: রোমের সংযুক্তি (১৮৭০):
* ১৮৭০ সালে ফ্রান্স-প্রাশিয়া যুদ্ধের সময় ফ্রান্স রোম থেকে তার সৈন্য প্রত্যাহার করে নিলে ইতালীয় সেনারা রোম দখল করে।
* পোপের জাগতিক ক্ষমতার অবসান হয়।
* ১৮৭১ সালে রোমকে ঐক্যবদ্ধ ইতালির রাজধানী ঘোষণা করা হয়।
গুরুত্ব:
* ইউরোপের রাজনীতিতে একটি নতুন বৃহৎ শক্তির উন্মোচন হয়।
* ইতালীয় জনগণের দীর্ঘদিনের জাতীয়তাবাদী আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়।
* পোপের জাগতিক ক্ষমতার অবসান হয়।
### ২. জার্মানির ঐক্যসাধন (Unification of Germany)
পটভূমি:
১৮১৫ সালের ভিয়েনা কংগ্রেসের পর জার্মানি প্রায় ৩৯টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যে বিভক্ত ছিল, যা নিয়ে গঠিত হয়েছিল "জার্মান কনফেডারেশন" (German Confederation)। এর নেতৃত্বে ছিল অস্ট্রিয়া। প্রাশিয়া ছিল দ্বিতীয় বৃহত্তম শক্তি। এই রাজ্যগুলির মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ঐক্য প্রায় ছিল না।
ঐক্যের প্রধান উপাদানসমূহ:
1. জোলভেরাইন (Zollverein – ১৮৩৪):
* প্রাশিয়ার নেতৃত্বে গঠিত একটি শুল্ক-সংঘ। এর মাধ্যমে জার্মান রাজ্যগুলির মধ্যে বাণিজ্য শুল্ক তুলে নেওয়া হয়, যা অর্থনৈতিক ঐক্যের ভিত্তি স্থাপন করে এবং প্রাশিয়ার অর্থনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধি করে। এটি অস্ট্রিয়াকে বাইরে রেখেছিল।
2. ফ্রাঙ্কফুর্ট পার্লামেন্ট (১৮৪৮):
* ১৮৪৮ সালের বিপ্লবের সময় এটি গঠিত হয়েছিল জার্মানির সংবিধান তৈরি ও ঐক্যের উদ্দেশ্যে। কিন্তু এটি জার্মানির ক্ষুদ্র ও বৃহৎ জার্মান রাষ্ট্রের ধারণায় (Kleindeutschland vs. Grossdeutschland) বিভেদ, এবং সামরিক সমর্থন অভাবে ব্যর্থ হয়।
3. অটো ভন বিসমার্কের ভূমিকা (Otto von Bismarck):
* উপাধি: 'লৌহ মানব' (Iron Chancellor)।
* ভূমিকা: ১৮৬২ সালে প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হন। তিনি বিশ্বাস করতেন, সংসদীয় আলোচনা বা সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের মাধ্যমে নয়, বরং "রক্ত ও লৌহ" (Blood and Iron) অর্থাৎ সামরিক শক্তি ও কঠোর কূটনীতির মাধ্যমে জার্মানির ঐক্য সম্ভব।
* নীতি: বাস্তববাদী রাজনীতি (Realpolitik) অনুসরণ করেন, যেখানে নৈতিকতা বা আদর্শের চেয়ে জাতীয় স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হতো।
ঐক্যের পর্যায়ক্রমিক ঘটনা (বিসমার্কের যুদ্ধসমূহ):
বিসমার্কের নেতৃত্বে প্রাশিয়া তিনটি স্বল্পকালীন যুদ্ধের মাধ্যমে জার্মানির ঐক্য সম্পন্ন করে:
1. ডেনমার্ক যুদ্ধ (Danish War – ১৮৬৪):
* শ্লেসভিগ (Schleswig) ও হলস্টাইন (Holstein) নামক দুটি জার্মানভাষী অঞ্চল নিয়ে ডেনমার্কের সাথে বিবাদ শুরু হয়।
* বিসমার্ক অস্ট্রিয়ার সাথে জোট বেঁধে ডেনমার্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন এবং জয়লাভ করেন।
* গ্যাস্টিন কনভেনশন (Convention of Gastein) অনুসারে, শ্লেসভিগ প্রাশিয়ার এবং হলস্টাইন অস্ট্রিয়ার শাসনাধীন হয়। এটি ছিল অস্ট্রিয়ার সাথে পরবর্তী বিবাদের বীজ বপনের প্রথম পদক্ষেপ।
2. অস্ট্রিয়া-প্রাশিয়া যুদ্ধ (Austro-Prussian War – ১৮৬৬):
* কারণ: হলস্টাইনের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রাশিয়া ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে বিবাদ। বিসমার্ক অস্ট্রিয়াকে জার্মানির বাইরে ঠেলে দিতে চেয়েছিলেন।
* যুদ্ধের গতি: এটি "সাত সপ্তাহের যুদ্ধ" (Seven Weeks' War) নামে পরিচিত। প্রাশিয়ার উন্নত সামরিক কৌশল ও দ্রুত গতির আক্রমণে অস্ট্রিয়া কোনিগ্রাৎজ (Königgrätz) বা স্যাডোয়ার (Sadowa) যুদ্ধে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়।
* প্রাগ চুক্তি (Treaty of Prague) অনুসারে:
* জার্মান কনফেডারেশনের বিলুপ্তি ঘটে।
* অস্ট্রিয়া জার্মানির রাজনৈতিক ক্ষমতা থেকে সম্পূর্ণভাবে অপসারিত হয়।
* প্রাশিয়ার নেতৃত্বে উত্তর জার্মান কনফেডারেশন (North German Confederation) গঠিত হয়, যেখানে জার্মানীর উত্তর রাজ্যগুলি যুক্ত হয়।
3. ফ্রান্স-প্রাশিয়া যুদ্ধ (Franco-Prussian War – ১৮৭০-৭১):
* কারণ: স্পেনের সিংহাসন নিয়ে বিবাদকে কেন্দ্র করে প্রাশিয়া ও ফ্রান্সের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। বিসমার্ক কৌশলে "এসমস টেলিগ্রাম" (Ems Dispatch) কে পরিবর্তন করে প্রকাশ করেন, যা ফরাসিদের ক্ষুব্ধ করে এবং ফ্রান্স প্রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। বিসমার্ক দক্ষিণ জার্মান রাজ্যগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য এই যুদ্ধকে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন।
* যুদ্ধের গতি: প্রাশিয়ার সুদক্ষ সামরিক বাহিনী (হফম্যান ভন মন্টকে-এর নেতৃত্বে) সেডানের যুদ্ধে (Battle of Sedan) ফরাসিদের চূড়ান্তভাবে পরাজিত করে এবং ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়নকে বন্দী করা হয়।
* প্যারিস অবরুদ্ধ হয় এবং শেষ পর্যন্ত ফ্রান্স আত্মসমর্পণ করে।
* ফ্রাঙ্কফুর্ট চুক্তি (Treaty of Frankfurt) অনুসারে:
* ফ্রান্স জার্মানিকে আলসাস (Alsace) ও লোরেন (Lorraine) প্রদেশ দুটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
* ফ্রান্সকে বিপুল পরিমাণ যুদ্ধ ক্ষতিপূরণ দিতে হয়।
জার্মান সাম্রাজ্যের ঘোষণা (১৮৭১):
ফ্রান্সের পরাজয়ের পর, ১৮৭১ সালের ১৮ই জানুয়ারি ভার্সাই প্রাসাদের হল অফ মিররস-এ (Hall of Mirrors) দক্ষিণ জার্মান রাজ্যগুলি উত্তর জার্মান কনফেডারেশনে যোগ দেয় এবং প্রাশিয়ার রাজা প্রথম উইলিয়াম (Wilhelm I) ঐক্যবদ্ধ জার্মান সাম্রাজ্যের সম্রাট (Kaiser) হিসেবে ঘোষিত হন।
গুরুত্ব:
* ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক ও শিল্পশক্তি হিসেবে জার্মানির উত্থান হয়।
* ইউরোপের ক্ষমতার ভারসাম্যে এক বিরাট পরিবর্তন আসে।
* ফরাসিদের আলসাস-লোরেন হারানোর ক্ষোভ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
* জার্মানির ঐক্যসাধন ছিল সামরিক শক্তির উপর ভিত্তি করে গঠিত একটি স্বৈরতান্ত্রিক জাতি-রাষ্ট্রের উদাহরণ।
উপসংহার:
ইতালি ও জার্মানির ঐক্যসাধন ছিল ১৯শ শতকের ইউরোপীয় ইতিহাসের এক যুগান্তকারী ঘটনা। এই জাতি-রাষ্ট্রগুলির উত্থান একদিকে যেমন জাতীয়তাবাদী আদর্শের জয়কে চিহ্নিত করে, তেমনি অন্যদিকে ইউরোপীয় শক্তিগুলির মধ্যে নতুন করে ক্ষমতার প্রতিযোগিতা, উপনিবেশবাদ এবং শেষ পর্যন্ত বিশ্বযুদ্ধের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।