খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে (প্রায় ৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক নতুন যুগের সূচনা হয়। এই সময় গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলে এবং ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে বেশ কিছু ক্ষমতাশালী স্বাধীন রাজ্য বা রাষ্ট্রীয় সত্তার উদ্ভব ঘটে, যা 'ষোড়শ মহাজনপদ' নামে পরিচিত।
* উৎপত্তি: 'মহা' (বৃহৎ) এবং 'জনপদ' (মানুষের বসতি বা উপজাতির পদচিহ্ন) শব্দ দুটি থেকে 'মহাজনপদ' শব্দটির উৎপত্তি। বৈদিক যুগের ছোট ছোট জনপদগুলি থেকে বৃহৎ ও সুসংগঠিত রাজনৈতিক সত্তা হিসেবে এদের বিকাশ ঘটে।
* ভূ-রাজনৈতিক বিবর্তন: বৈদিক যুগে উপজাতি-ভিত্তিক (tribal) সমাজ ছিল, যেখানে জন (tribe) ছিল মূল রাজনৈতিক একক। কিন্তু খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে উপজাতিগত আনুগত্যের পরিবর্তে আঞ্চলিক আনুগত্য বৃদ্ধি পায়, যা জনপদগুলিকে মহাজনপদে রূপান্তরিত করে।
ষোড়শ মহাজনপদ ১৫০ টি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
### ২. উত্থানের কারণ ও বৈশিষ্ট্য
* কৃষি অর্থনীতির বিকাশ: লোহার লাঙ্গলের ব্যবহার এবং উন্নত সেচ ব্যবস্থার ফলে কৃষি উৎপাদন বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। এর ফলে জনসংখ্যার বৃদ্ধি ঘটে এবং গ্রামীণ অর্থনীতিতে উদ্বৃত্ত উৎপাদন সম্ভব হয়, যা শহর ও বাণিজ্যের প্রসারে সহায়ক হয়।
* দ্বিতীয় নগরায়ন (Second Urbanisation): এই সময় 'দ্বিতীয় নগরায়ন' শুরু হয়। অনেক জনপদ সমৃদ্ধশালী বাণিজ্যকেন্দ্র ও শহরে পরিণত হয় (যেমন - কৌশাম্বী, শ্রাবস্তী, রাজগৃহ, চম্পা, বারাণসী)। এই শহরগুলি প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
* লোহার ব্যবহার: লোহার ব্যাপক ব্যবহার কৃষি, যুদ্ধাস্ত্র নির্মাণ ও হস্তশিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনে। শক্তিশালী লোহার অস্ত্রের ব্যবহার বৃহত্তর অঞ্চল জয় ও নিয়ন্ত্রণের জন্য সহায়ক হয়।
* অর্থনৈতিক পরিবর্তন: মুদ্রা অর্থনীতির প্রচলন (আহত মুদ্রা বা Punch-marked coins) বাণিজ্য ও লেনদেনকে সহজ করে তোলে। এই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি মহাজনপদগুলির উত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
* রাজনৈতিক সংহতি: ছোট ছোট উপজাতিগত সংঘাতের পরিবর্তে বৃহৎ রাজ্যগুলির মধ্যে আঞ্চলিক ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগিতা শুরু হয়, যার ফলে শক্তিশালী শাসনব্যবস্থা গড়ে ওঠে।
### ৩. উৎস (Sources)
ষোড়শ মহাজনপদ সম্পর্কে প্রধানত দুটি গ্রন্থ থেকে তথ্য পাওয়া যায়:
* বৌদ্ধ গ্রন্থ:
* অঙ্গুত্তর নিকায় (Anguttara Nikaya): এই গ্রন্থেই ষোড়শ মহাজনপদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা পাওয়া যায়।
* মহাবস্তু (Mahavastu): এটিও মহাজনপদগুলির উল্লেখ করে, তবে তালিকাটি অঙ্গুত্তর নিকায়ের থেকে সামান্য ভিন্ন।
* চুল্লানিব্ভেসা (Cullaniddesa): এতেও মহাজনপদের উল্লেখ আছে।
* জৈন গ্রন্থ:
* ভগবতী সূত্র (Bhagavati Sutra): এই গ্রন্থেও ষোড়শ মহাজনপদের একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে, যা বৌদ্ধ গ্রন্থগুলির তালিকার থেকে কিছুটা ভিন্ন।
উল্লেখ্য: বিভিন্ন গ্রন্থে তালিকার মধ্যে সামান্য ভিন্নতা থাকলেও, অঙ্গুত্তর নিকায়ের তালিকাটিই সর্বাধিক স্বীকৃত।
### ৪. ষোড়শ মহাজনপদের তালিকা ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
| ১. | কাশী (Kashi) | বারাণসী | আধুনিক বারাণসী (উত্তর প্রদেশ)। এটি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও বাণিজ্য কেন্দ্র। কোশলের সঙ্গে এর তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল। | রাজতান্ত্রিক |
| ২. | কোশল (Kosala) | শ্রাবস্তী, কুশাবতী | আধুনিক পূর্ব উত্তর প্রদেশ (অযোধ্যা অঞ্চল)। সরযু নদীর তীরে অবস্থিত। রাজা প্রশেনজিৎ ছিলেন সমসাময়িক শক্তিশালী শাসক। বুদ্ধের সময়ে শক্তিশালী রাজ্য। | রাজতান্ত্রিক |
| ৩. | অঙ্গ (Anga) | চম্পা | আধুনিক বিহারের ভাগলপুর ও মুঙ্গের জেলা। চম্পা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র। এটি মগধের রাজা বিম্বিসার কর্তৃক দখল হয়। | রাজতান্ত্রিক |
| ৪. | মগধ (Magadha) | রাজগৃহ/গিরিব্রজ, পরে পাটলিপুত্র | আধুনিক বিহারের পাটনা ও গয়া জেলা। সবচেয়ে শক্তিশালী মহাজনপদ। এটিই পরে সাম্রাজ্য হিসেবে গড়ে ওঠে। বিম্বিসার ও অজাতশত্রু এর প্রভাবশালী শাসক ছিলেন। | রাজতান্ত্রিক |
| ৫. | বজ্জি (Vajji) | বৈশালী | আধুনিক বিহারের মুজাফ্ফরপুর ও দ্বারভাঙ্গা জেলা। আটটি বা ৯টি গণরাজ্যের (যেমন - লিচ্ছবি, বিদাহী, জ্ঞাতৃক) একটি সংঘ। এটি ছিল একটি অরাজতান্ত্রিক রাজ্য। | গণরাজ্য |
| ৬. | মল্ল (Malla) | কুশিনগর, পাভা | আধুনিক উত্তর প্রদেশের গোরক্ষপুর অঞ্চল। দুটি শাখায় বিভক্ত একটি গণরাজ্য। গৌতম বুদ্ধ ও মহাবীর উভয়ই এখানে দেহত্যাগ করেন। | গণরাজ্য |
| ৭. | চেদি (Chedi) | সোত্থিবতী/শুক্তিুমতি | আধুনিক বুন্দেলখণ্ড অঞ্চল (মধ্যপ্রদেশ)। মহাভারতের সময় থেকেই পরিচিত। | রাজতান্ত্রিক |
| ৮. | বৎস (Vatsa) | কৌশাম্বী | আধুনিক উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদের কাছে। যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র। রাজা উদয়ন ছিলেন প্রভাবশালী শাসক। | রাজতান্ত্রিক |
| ৯. | কুরু (Kuru) | ইন্দ্রপ্রস্থ/হস্তিনাপুর | আধুনিক দিল্লী ও মেরঠ অঞ্চল। মহাভারতের কুরুক্ষেত্র অঞ্চলেরই অংশ। মূলত রাজতান্ত্রিক হলেও মাঝে মাঝে গণরাজ্যের বৈশিষ্ট্য দেখা গেছে। | রাজতান্ত্রিক |
| ১০. | পাঞ্চাল (Panchala) | অহিচ্ছত্র (উত্তর), কাম্পিল্য (দক্ষিণ) | আধুনিক উত্তর প্রদেশের বেরিলি, বদাউন ও ফারুখাবাদ জেলা। দ্রৌপদী এই রাজ্যের রাজকুমারী ছিলেন। | রাজতান্ত্রিক |
| ১১. | মৎস (Matsya) | বিরাটনগর | আধুনিক রাজস্থানের জয়পুর অঞ্চল। মৎস্য দেশ নামেও পরিচিত। | রাজতান্ত্রিক |
| ১২. | শূরসেন (Surasena) | মথুরা | আধুনিক উত্তর প্রদেশের মথুরা অঞ্চল। যদু বংশের শাসন ছিল। কৃষ্ণের সঙ্গে সম্পর্কিত। | রাজতান্ত্রিক |
| ১৩. | অস্মক (Ashmaka) | পোতন/পতিঠন | গোদাবরী নদীর তীরে অবস্থিত (আধুনিক মহারাষ্ট্র)। এটি ছিল দক্ষিণ ভারতের একমাত্র মহাজনপদ। | রাজতান্ত্রিক |
| ১৪. | অবন্তী (Avanti) | উজ্জয়িনী (উত্তর), মহিষ্মতী (দক্ষিণ) | আধুনিক মধ্যপ্রদেশের মালওয়া অঞ্চল। উত্তর অবন্তীর রাজধানী উজ্জয়িনী ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য ও প্রশাসনিক কেন্দ্র। রাজা চণ্ডপ্রদ্যোত পরিচিত। | রাজতান্ত্রিক |
| ১৫. | গান্ধার (Gandhara) | তক্ষশীলা | আধুনিক পাকিস্তান (পেশোয়ার ও রাওয়ালপিন্ডি অঞ্চল)। তক্ষশীলা ছিল বিখ্যাত শিক্ষাকেন্দ্র ও বাণিজ্য পথ। পারস্য সাম্রাজ্যের প্রভাব ছিল। | রাজতান্ত্রিক |
| ১৬. | কম্বোজ (Kamboja) | রাজাপুর/হাটক | আধুনিক জম্মু ও কাশ্মীর এবং আফগানিস্তানের কিছু অংশ। উৎকৃষ্ট অশ্বের জন্য বিখ্যাত ছিল। | রাজতান্ত্রিক |
### ৫. শাসনব্যবস্থার প্রকৃতি
ষোড়শ মহাজনপদগুলিকে প্রধানত দু'ভাগে ভাগ করা যায়:
* রাজতান্ত্রিক (Monarchical): অধিকাংশ মহাজনপদেই রাজতান্ত্রিক শাসন প্রচলিত ছিল। এখানে বংশানুক্রমিক রাজা শাসনকার্য পরিচালনা করতেন। রাজা ছিলেন সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী এবং তাঁকে সাহায্য করার জন্য মন্ত্রী ও অন্যান্য কর্মচারী থাকত। যেমন - মগধ, কোশল, অবন্তী, কাশী ইত্যাদি।
* অরাজতান্ত্রিক/গণরাজ্য (Non-monarchical/Republican): বজ্জি ও মল্ল ছিল অরাজতান্ত্রিক বা গণরাজ্য। এই রাজ্যগুলিতে একক রাজা শাসন করতেন না, বরং নির্বাচিত প্রতিনিধি বা 'গণ' (assemblies) দ্বারা শাসনকার্য পরিচালিত হত। লিচ্ছবিরা ছিল বজ্জি সংঘের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গণ। এই গণরাজ্যগুলিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হতো সভার মাধ্যমে, যেখানে বয়স্ক পুরুষ সদস্যরা উপস্থিত থাকতেন।
### ৬. তাৎপর্য ও গুরুত্ব
ষোড়শ মহাজনপদের যুগ ভারতীয় ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণ। এর প্রধান তাৎপর্যগুলি হল:
* রাজনৈতিক সংহতি ও সাম্রাজ্যবাদের ভিত্তি: ছোট ছোট জনপদ ভেঙে বৃহত্তর ও শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলির উদ্ভব হয়। এই সময়েই উত্তর ভারতে একটি বৃহৎ সাম্রাজ্য গড়ে তোলার ভিত্তি তৈরি হয়, যা পরবর্তীতে মগধের উত্থানের মাধ্যমে পূর্ণতা লাভ করে।
* নগর ও বাণিজ্যের বিকাশ: এই যুগ ছিল দ্বিতীয় নগরানয়নের সময়কাল। শহরগুলির দ্রুত বিকাশ ঘটে এবং অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রসার হয়।
* সামাজিক পরিবর্তন: বর্ণপ্রথার জটিলতা বৃদ্ধি পায়, কিন্তু একই সাথে নতুন সামাজিক শ্রেণির (যেমন ব্যবসায়ী, কারিগর) গুরুত্ব বাড়ে।
* নতুন ধর্মমতের উদ্ভব: ব্রাহ্মণদের প্রভাব এবং প্রচলিত বৈদিক ধর্মের যাগযজ্ঞের জটিলতা ও ব্যয়ের প্রতিবাদস্বরূপ বৌদ্ধধর্ম ও জৈনধর্মের মতো নতুন ধর্মমতগুলির উত্থান এই সময়েই ঘটে। মহাজনপদগুলির উদার পরিবেশ এই ধর্মগুলির প্রচারে সহায়ক হয়।
* সামরিক শক্তির বিকাশ: লোহার ব্যাপক ব্যবহার শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গঠনে সহায়ক হয়। রথ, হস্তী এবং অশ্বারোহী বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
### ৭. মগধের উত্থান
ষোড়শ মহাজনপদগুলির মধ্যে মগধ ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী। এর উত্থানের পিছনে নিম্নলিখিত কারণগুলি দায়ী:
* ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান: মগধের রাজধানী রাজগৃহ (পরে পাটলিপুত্র) পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত ছিল এবং এর অবস্থান গঙ্গা নদীর তীরে হওয়ায় বাণিজ্য ও যোগাযোগে সুবিধা ছিল।
* অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি: উর্বর পলিমাটি এবং পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে কৃষিকাজ উন্নত ছিল। এছাড়া, লোহার খনিজ সম্পদের প্রাচুর্য ছিল, যা অস্ত্র ও কৃষি সরঞ্জাম তৈরিতে সহায়ক হয়েছিল।
* শক্তিশালী শাসক: বিম্বিসার, অজাতশত্রু, মহাপদ্ম নন্দ - এই শক্তিশালী ও দূরদর্শী শাসকরা মগধের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।
* সামরিক শক্তি: মগধের ছিল শক্তিশালী সামরিক বাহিনী, বিশেষত হস্তী বাহিনী, যা অন্য রাজ্যগুলির কাছে ছিল না।
শেষ পর্যন্ত মগধ অন্যান্য মহাজনপদগুলিকে জয় করে ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম বৃহৎ সাম্রাজ্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে, যা মৌর্য সাম্রাজ্যের উত্থানের পথ প্রশস্ত করে।
* তালিকা মুখস্থ করুন: প্রতিটি মহাজনপদের নাম, রাজধানী এবং বর্তমান অবস্থান ভালোভাবে মনে রাখুন।
* গণরাজ্য বনাম রাজতন্ত্র: কোন মহাজনপদগুলি গণরাজ্য ছিল (বজ্জি ও মল্ল) এবং কোনগুলি রাজতান্ত্রিক ছিল, তা চিহ্নিত করুন।
* উৎস গ্রন্থ: অঙ্গুত্তর নিকায় এবং ভগবতী সূত্র - এই দুটি গ্রন্থের নাম অবশ্যই মনে রাখুন।
* গুরুত্ব ও তাৎপর্য: মহাজনপদগুলির উত্থানের কারণ, দ্বিতীয় নগরায়ন এবং মগধের উত্থানের কারণগুলি বুঝে পড়ুন।
* গুরুত্বপূর্ণ শাসক: কিছু মহাজনপদের (যেমন মগধ, কোশল, অবন্তী, বৎস) গুরুত্বপূর্ণ শাসকদের নাম মনে রাখতে চেষ্টা করুন।
* দক্ষিণের একমাত্র: অস্মক ছিল দক্ষিণ ভারতের একমাত্র মহাজনপদ। এই তথ্যটি প্রায়শই প্রশ্ন হিসেবে আসে।
FAQ Questions Answers
1. ষোড়শ মহাজনপদ কী?
প্রাচীন ভারতের শক্তিশালী রাজ্যগুলি।
2. মহাজনপদগুলির সংখ্যা কত ছিল?
ষোলোটি।
3. মহাজনপদগুলির সময়কাল কী ছিল?
খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক থেকে চতুর্থ শতক।
4. এদের ভৌগোলিক অবস্থান কেমন ছিল?
মূলত উত্তর ভারত ও দাক্ষিণাত্য।
5. মহাজনপদগুলি কেন গুরুত্বপূর্ণ?
প্রাচীন ভারতের রাজনৈতিক ও সামাজিক ভিত্তি।
6. কোশলের রাজধানী কোথায় ছিল?
শ্রাবস্তী।
7. মগধের প্রথম রাজধানী কোনটি ছিল?
গিরিব্রজ বা রাজগৃহ।
8. অবন্তীর রাজধানী কী ছিল?
উজ্জয়িনী।
9. বৎস মহাজনপদের রাজধানী কোথায় ছিল?
কৌশান্তী।
10. চেদির রাজধানী কোনটি ছিল?
শুক্তিমতী।
11. অঙ্গের রাজধানী কী ছিল?
চম্পা।
12. কাশীর রাজধানী কোথায় ছিল?
বারাণসী।
13. সুরসেনের রাজধানী কোনটি ছিল?
মথুরা।
14. কুরু রাজ্যের রাজধানী কী ছিল?
ইন্দ্রপ্রস্থ।
15. পাঞ্চালের দুটি রাজধানী কী ছিল?
অহিচ্ছত্র ও কাম্পিল্য।
16. মৎস্য মহাজনপদের রাজধানী কোথায় ছিল?
বিরাটনগর।
17. গান্ধারের রাজধানী কোনটি ছিল?
তক্ষশীলা।
18. কম্বোজের রাজধানী কী ছিল?
রাজপুর বা হাটক।
19. অশ্মকের রাজধানী কোথায় ছিল?
পোতন বা প্রতিষ্টান।
20. মল্লের দুটি রাজধানী কী ছিল?
কুশিনগর ও পাভা।
21. বজ্জি বা বৃজি সংঘের রাজধানী কী ছিল?
বৈশালী।
22. কোন মহাজনপদ গঙ্গার তীরে অবস্থিত ছিল?
মগধ, কাশী, অঙ্গ, বৎস।
23. মগধের প্রথম শক্তিশালী রাজা কে ছিলেন?
বিম্বিসার।
24. কোশলের বিখ্যাত রাজা কে ছিলেন?
প্রসেনজিৎ।
25. কোন মহাজনপদটি প্রজাতন্ত্র ছিল?
বজ্জি ও মল্ল।
26. কোন মহাজনপদগুলি রাজতান্ত্রিক ছিল?
মগধ, কোশল, অবন্তী ইত্যাদি।
27. ষোড়শ মহাজনপদের উল্লেখ কোন গ্রন্থে পাওয়া যায়?
অঙ্গুত্তর নিকায় ও ভগবতী সূত্র।
28. বৌদ্ধ ধর্মানুসারে ষোড়শ মহাজনপদের তালিকা কোনটিতে আছে?
অঙ্গুত্তর নিকায়।
29. জৈন ধর্মানুসারে ষোড়শ মহাজনপদের তালিকা কোনটিতে আছে?
ভগবতী সূত্র।
30. তক্ষশীলা বর্তমানে কোন দেশে অবস্থিত?
পাকিস্তান।
31. মগধের উত্থানের কারণ কী ছিল?
উর্বর ভূমি, খনিজ সম্পদ, ভৌগোলিক অবস্থান।
32. মগধের শেষ শক্তিশালী মহাজনপদ কোনটি ছিল?
নন্দ সাম্রাজ্য।
33. কোন মহাজনপদ দক্ষিণ ভারতে অবস্থিত ছিল?
অশ্মক।
34. অবন্তীর কোন রাজা মগধের রাজা বিম্বিসারের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন?
চণ্ড প্রদ্যোত।
35. বুদ্ধের সময়কালে কোন মহাজনপদগুলি শক্তিশালী ছিল?
মগধ, কোশল, বৎস, অবন্তী।
36. ষোড়শ মহাজনপদগুলির মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী কোনটি ছিল?
মগধ।
37. কোন নদীর তীরে অঙ্গ অবস্থিত ছিল?
চম্পা নদী।
38. মথুরা কোন নদীর তীরে অবস্থিত ছিল?
যমুনা নদী।
39. কুরু রাজ্য কোন মহাকাব্যের সাথে যুক্ত?
মহাভারত।
40. পাঞ্চাল কোন নদীর তীরে ছিল?
গঙ্গা ও রামগঙ্গা।
41. বৈশালী কোন শাসন পদ্ধতির জন্য বিখ্যাত ছিল?
গণতান্ত্রিক শাসন।
42. অশ্মকের রাজধানী পোতন কোন নদীর তীরে ছিল?
গোদাবরী।
43. গান্ধার কিসের জন্য বিখ্যাত ছিল?
তক্ষশীলা বিশ্ববিদ্যালয়।
44. বৃজি সংঘ কতটি গোত্র নিয়ে গঠিত ছিল?
আটটি।
45. ষোড়শ মহাজনপদগুলি কীভাবে শেষ হয়েছিল?
মগধের সাম্রাজ্য বিস্তারের ফলে।
46. মগধের হর্যঙ্ক বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন?
বিম্বিসার।
47. কুরু মহাজনপদ আধুনিক ভারতের কোন অঞ্চলে ছিল?
দিল্লি ও হরিয়ানা।
48. পাঞ্চাল মহাজনপদ আধুনিক ভারতের কোন অঞ্চলে ছিল?
উত্তরপ্রদেশ (বেরেলি, বদাউন, ফররুখাবাদ)।
49. কোশল মহাজনপদ আধুনিক ভারতের কোন অঞ্চলে ছিল?
উত্তরপ্রদেশ (অযোধ্যা)।
50. কাশীর প্রাচীন নাম কী ছিল?
বারাণসী।
51. ষোড়শ মহাজনপদ কথাটির অর্থ কী?
এর অর্থ হলো 'ষোলোটি বৃহৎ রাজ্য' বা 'মহা জনপদ'।
52. মহাজনপদগুলির প্রধান বৈশিষ্ট্য কী ছিল?
এগুলি ছিল শক্তিশালী এবং সুসংগঠিত রাষ্ট্র।
53. কোন ধর্মীয় উত্থানের সময় মহাজনপদগুলি গড়ে উঠেছিল?
বৌদ্ধধর্ম ও জৈনধর্মের উত্থানের সময়ে।
54. মহাজনপদগুলির উদ্ভবের পেছনের প্রধান কারণ কী ছিল?
লোহার ব্যবহার ও কৃষির সম্প্রসারণ।
55. কোন যুগে মহাজনপদগুলির বিকাশ ঘটেছিল?
খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দী থেকে খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীর মধ্যে।
56. অঙ্গ মহাজনপদ বর্তমান ভারতের কোন রাজ্যে অবস্থিত ছিল?
বিহারের ভাগলপুর ও মুঙ্গের অঞ্চলে।
57. মগধ মহাজনপদ বর্তমান ভারতের কোন রাজ্যে অবস্থিত ছিল?
বিহারের পাটনা ও গয়া জেলায়।
58. কাশী মহাজনপদ কিসের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল?
বস্ত্র ও বণিকদের কেন্দ্র হিসেবে।
59. কোশল মহাজনপদ কোন নদীর তীরে অবস্থিত ছিল?
সরয়ু নদীর তীরে।
60. কোশল মহাজনপদের অন্তর্গত একটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের নাম কী?
শ্রাবস্তী।
61. মল্ল মহাজনপদ কোন দুটি শাসন পদ্ধতির জন্য পরিচিত ছিল?
কিছু অংশ রাজতান্ত্রিক এবং কিছু অংশ প্রজাতান্ত্রিক ছিল।
62. বৃজি বা বজ্জি সংঘে কোন ৮টি গোত্র অন্তর্ভুক্ত ছিল?
বিদেহ, লিচ্ছবি, জ্ঞাত্রিক সহ আটটি গোত্র।
63. বৈশালী শহরটি কোন মহাজনপদের অধীনে ছিল?
বৃজি সংঘের।
64. চেদি মহাজনপদ বর্তমান ভারতের কোন অঞ্চলে ছিল?
মধ্যপ্রদেশের বুন্দেলখণ্ড অঞ্চলে।
65. বৎস মহাজনপদ কোন নদীর তীরে অবস্থিত ছিল?
যমুনা নদীর তীরে।
66. কুরু মহাজনপদের প্রধান শহর কোনটি ছিল?
ইন্দ্রপ্রস্থ।
67. পাঞ্চাল মহাজনপদ কোন দুটি ভাগে বিভক্ত ছিল?
উত্তর পাঞ্চাল ও দক্ষিণ পাঞ্চাল।
68. উত্তর পাঞ্চালের রাজধানী কী ছিল?
অহিক্ষত্র।
69. দক্ষিণ পাঞ্চালের রাজধানী কী ছিল?
কাম্পিল্য।
70. মৎস্য মহাজনপদ বর্তমান ভারতের কোন রাজ্যে অবস্থিত?
রাজস্থানের জয়পুর অঞ্চলে।
71. সুরসেন মহাজনপদ কোন নদীর তীরে অবস্থিত ছিল?
যমুনা নদীর তীরে।
72. অবন্তী মহাজনপদ কোন দুটি ভাগে বিভক্ত ছিল?
উত্তর অবন্তী ও দক্ষিণ অবন্তী।
73. উত্তর অবন্তীর রাজধানী কী ছিল?
উজ্জয়িনী।
74. দক্ষিণ অবন্তীর রাজধানী কী ছিল?
মাহিস্মতী।
75. গান্ধার মহাজনপদ কোন দুটি নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে ছিল?
সিন্ধু ও ঝিলাম নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে।
76. কম্বোজ মহাজনপদ কিসের জন্য বিখ্যাত ছিল?
উন্নত জাতের ঘোড়ার জন্য।
77. অশ্মক মহাজনপদ কোন নদীর তীরে অবস্থিত ছিল?
গোদাবরী নদীর তীরে।
78. অশ্মক ছিল ষোড়শ মহাজনপদগুলির মধ্যে কোন দিকে অবস্থিত?
দক্ষিণতম।
79. কোন মহাজনপদগুলি লোহার খনিজ সম্পদ দ্বারা সমৃদ্ধ ছিল?
মগধ ও অবন্তী।
80. ষোড়শ মহাজনপদগুলি মূলত কোন অঞ্চলে অবস্থিত ছিল?
উত্তর ভারত এবং দাক্ষিণাত্যর কিছু অংশে।
81. বিম্বিসার কোন মহাজনপদের রাজা ছিলেন?
মগধের।
82. প্রসেনজিৎ কোন মহাজনপদের রাজা ছিলেন?
কোশলের।
83. বুদ্ধ কোন মহাজনপদে নির্বাণ লাভ করেছিলেন?
মল্ল মহাজনপদের কুশিনগরে।
84. ষোড়শ মহাজনপদগুলির মধ্যে কোনটি প্রাচীন ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র ছিল?
কাশী।
85. ষোড়শ মহাজনপদগুলির মধ্যে কোনটি একটি শিক্ষা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল?
গান্ধার (তক্ষশীলা ছিল)।
86. মগধ কীভাবে অন্যান্য মহাজনপদগুলির উপর আধিপত্য বিস্তার করেছিল?
শক্তিশালী সামরিক বাহিনী ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মাধ্যমে।
87. কোন মহাজনপদটি বিদেহ এবং লিচ্ছবিদের আবাসস্থল ছিল?
বৃজি সংঘ।
88. ষোড়শ মহাজনপদগুলির মধ্যে কোনটিতে হস্তী সেনার ব্যবহার বেশি ছিল?
মগধে।
89. কোন মহাজনপদ হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত ছিল?
কোশল।
90. গান্ধার মহাজনপদ কোন বিখ্যাত বাণিজ্য পথের অংশ ছিল?
সিল্ক রুটের (উত্তর পথ)।
91. ষোড়শ মহাজনপদগুলির মধ্যে কোনটি প্রথম প্রজাতন্ত্র রূপে গড়ে ওঠে?
বৃজি সংঘ।
92. অবন্তীর রাজা প্রদ্যোত কার সমসাময়িক ছিলেন?
গৌতম বুদ্ধ ও বিম্বিসারের।
93. কোশলের রাজধানী শ্রাবস্তী কিসের জন্য বিখ্যাত ছিল?
বৌদ্ধ বিহার ও জৈন মন্দিরের জন্য।
94. মল্ল মহাজনপদটি কোন দুটি প্রধান শহরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল?
কুশিনগর ও পাভা।
95. পাঞ্চাল মহাজনপদ কোন দুই বিখ্যাত গুরুকুলের জন্য পরিচিত?
দ্রোণাচার্যের গুরুকুল এবং ঋষি পরশুরামের আশ্রম।
96. মগধের কোন শাসক পাটলিপুত্র নগরীর পত্তন করেন?
উদয়িন।
97. ষোড়শ মহাজনপদগুলির রাজনৈতিক কাঠামো কেমন ছিল?
বেশিরভাগ রাজতান্ত্রিক ছিল, কিছু প্রজাতন্ত্রও ছিল।
98. কৌশল ও মগধের মধ্যে প্রথম বড় যুদ্ধ কখন হয়েছিল?
বিম্বিসার ও প্রসেনজিতের সময়কালে।
99. কোন মহাজনপদ প্রাচীনকালে একটি বিশাল নৌবহর পরিচালনা করত?
অঙ্গ (সমুদ্র বাণিজ্যের জন্য)।
100. ষোড়শ মহাজনপদগুলির একীকরণ বা ধ্বংসের মূল কারণ কী ছিল?
মগধের সাম্রাজ্য বিস্তার।